ছবি:সংগৃহীত
সিলেট জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পর্যটন সমৃদ্ধ এলাকার সাদাপাথর ও ভোলাগঞ্জের রোপওয়ের সংরক্ষিত বাঙ্কার থেকে চলছে পাথর লুটপাট। পাথরের সাথে লিজ বহির্ভূত জায়গা থেকেও দিনরাত চলছে বালু উত্তোলন। এসব বালু আর পাথর সড়কপথে যায় ধোপাগুলে। অবৈধ এই পাথর ও বালুর গাড়ি বৈধতা পায় পোশাকি বাহিনীকে টাকা দিলে। যারা টাকা দেয় না তাদের গাড়ি ধরে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এমন অভিযোগ করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, পাথর বোঝাই ট্রাকগুলোর উপরে হালকা বালু দিয়ে নিয়ে যেতে বলে পুলিশ। যাতে দেখে মনে হয় বালু বোঝাই ট্রাক। এসব গাড়ি থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা দিতে হয়েছে তাকে। আর বালু বোঝাই ট্রাক থেকে দিতে হয়েছে ৫’শ থেকে হাজার টাকা।
এ সময় এসআই মিলন ফকির লোহার স্পেন সহ একটি ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা আটক করেন। বাঙ্কার থেকে চুরি করে নিয়ে আসা লোহার স্পেনের অটোরিকশা থেকে ১০ হাজার টাকা নেন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, অটোরিকশাটি পুলিশকে দেখে ডাকঘর গ্রামের ভিতর চলে যায়। পুলিশ অটোরিকশাকে তাড়া করে ডাকঘর মসজিদের সামন থেকে আটক করে মেইন রোডে নিয়ে আসেন। পরে সেটাকে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। গতকাল সোমবার একাধিক ট্রাক আটক করা হলেও টাকার বিনিময়ে পরবর্তীতে ছেড়ে দেয়া হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ধলাই সেতুর পূর্ব পাড় সংলগ্ন কয়েকটি ক্রাশার মিলে সাদাপাথরের স্তুপ রয়েছে। কলাবাড়ী এলাকায় সাদাপাথর ভাঙ্গে এমন ১৫টি ক্রাশার মিলে লক্ষাধিক ফুট পাথর রয়েছে। এসব পাথর ভাঙ্গার মেশিন থেকে ব্যবসায়ীদেরকে সপ্তাহে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা দিতে হয়। যার কারণে সেগুলোতে কখনো পুলিশ অভিযান চালায় না।
স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, গত মাসের শুরুতে কোম্পানীগঞ্জ থানার একজন পুলিশ এসে সবার উপর সাপ্তাহিক চাঁদা ধার্য করেন। সেই টাকা দেওয়ার কারণে তাদের মিলে আর পুলিশ অভিযান দেয় না। গত ৫ আগস্টের পর রাতদিন সাদাপাথর ও বাঙ্কার থেকে চলছে পাথর হরিলুট। রাস্তায় ডিউটিতে থাকা পুলিশকে ম্যানেজ করে হরহামেশাই চলছে সাদাপাথর বোঝাই গাড়ি। যখন যে পুলিশ ডিউটিতে আসে তখন তাকে ম্যানেজ করেন ব্যবসায়ীরা। আবার অনেক পুলিশ সদস্য ডিউটিতে আসার আগেই ফোন করে জানান দেন পাথর ব্যবসায়ীদেরকে।
এদিকে, ধলাই সেতুর নিচ থেকে প্রতি রাতে শতাধিক লোক নৌকা দিয়ে বালু উত্তোলন করছে। বালু ভর্তি প্রতি নৌকা থেকে ১’শ টাকা করে চাঁদা নেয় স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী।
স্থানীয়দের অভিযোগ থানা পুলিশকে বিষয়টি জানালেও ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি রক্ষায় পুলিশ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। অভিযুক্ত এসআই মিলন ফকিরের মোবাইলে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি উজায়ের আল মাহমুদ আদনান বলেন, থানার সকল অফিসারকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে কেউ যাতে সাদাপাথরের গাড়ি যেতে না দেয়। আমরা সাদাপাথর ও অবৈধ বালুর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছি। গত শনিবার বিকালে পুলিশ অভিযান দিয়ে একটি সাদাপাথরের গাড়ি আটক করেছে।