
নিজস্ব ছবি
ঘরে এক বেলা রান্না জোটে তো অন্যবেলা অভূক্ত থাকতে হয়। ওষুধ কিনবো কিভাবে, গরিবের আবার বিচার কি?। বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের ঢুলিগাতি গ্রামের এক নির্যাতিত দিনমজুর পরিবারের স্ত্রী কল্পনা রানী হালদার(৫০) এ কথাগুলো বলতে গিয়ে অজোরে কাঁদলেন। ইউনিয়ন পরিষদে বিচার দিয়েও হয়নি কোন সমাধান। বিত্তবান প্রভাবশালীদের কাছে সকলেই যেনো চুপ।
বুধবার ((২৯ মার্চ) সরেজমিনে ভূক্তভোগী পরিবার জানান, উপজেলার তেলিগাতী ইউনিয়নের ঢুলিগাতী গ্রামের নির্যাতিত দিনমজুর কৃষক রমনী হালদার (৬৫)কে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি তার ছেলে সুমন হালদারের নিকট একই গ্রামের প্রতিবেশী প্রভাবশালী ওমর আলী হাওলাদার ভ্যান ভাড়া বাবদ ১৫০ টাকা পাওনাকে কেন্দ্র করে বাকবিতান্ডা হয়। এর জের ধরে সন্ধ্যায় ঢুলিগাতী বাজারে কৃষক রমনী হালদারকে পরিকল্পিতভাবে ওমর আলী হাওলাদারসহ ৩/৪জনে অমানবিক নির্যাতন মারপিট করে শরীরের গোপনাঙ্গ (অন্ডকোষ) কামড়িয়ে রক্তাক্ত জখম করে।
পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজনের সহযোগীতায় তাকে উদ্ধার করে বাগেরহাট জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ১৮ দিন চিকিৎসা নিয়ে কোন মতে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসে। বর্তমানে অর্থের অভাবে তার ওষুধপত্র জুটছে না বিছানায় কাতরাচ্ছেন বৃদ্ধ রমনী হালদার ৫ সদস্যর পরিবারের একমাত্র উপার্যনের ভরসা ছিলো দিনমজুর রমনী।
মানুষের জমিতে কৃষান দিয়ে সংসার চলতো তাদের। এখন ওই পরিবারটি এক বেলা রান্না জোটে, অন্য বেলায় থাকতে হচ্ছে না খেয়ে। পরিবারের একমাত্র ছেলে সুমন হালদার ভ্যান চালিয়ে কোনমতে সংসার চলছে।
রমনী হালদারের স্ত্রী কল্পনা রানী বলেন, হাসপাতালে রক্তাক্ত জখমী স্বামীকে নিয়ে এক কাপড়ে ১৮দিন ছিলাম হাসপাতালে। নিজেও অসুস্থ হয়ে পড়েছি। খাবার জোটেনা, ওষুধ কিনবো কি দিয়ে ?। চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে প্রায় ১ মাস হলেও কোন সমাধান হয়নি। গরিবের আবার বিচার কি?। ছেলে একাধিকবার পরিষদে গেলেও চেয়ারম্যান বলছে ঢুলিগাতীর বিষয় পরে দেখবো।
এ বিষয়ে বাগেরহাট জেলা হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার সোমাদ্দার বলেন, রমনী হালদার হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। অন্ডকোষে কামড়ের আঘাত রয়েছে। ওখানের অনেক অংশে জুড়ে মাংস থেতলিয়ে গেছে তার ইনজুরিটি গুরুত্বর।
ওমর আলী হাওলাদার বলেন, রমনী হালদারের সাথে পাওয়া টাকা নিয়ে ছোটখাটো মারামারি হয়েছে। আমাকেও সে মারপিট করেছে। অন্ডকোষ জখমের বিষয়টি ষড়যন্ত্র।
এদিকে দিনমজুরের ওপর এ ধরনের হামলার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. আলী হাসান ফকির, স্থানীয় বাসিন্দা দিপু রায়, সঞ্চয় হালদার, আব্দুস ছোবাহান খান, শাখাওয়াত হাওলাদার সহ একাধিকরা।
এ সর্ম্পকে তেলিগাতী ইউপি চেয়ারম্যান মোরশেদা আক্তার বলেন, রমনী হালদারের মারপিটের ঘটনা বিষয়টি প্রথমে মৌখিকভাবে পরিবারের লোকজন জানিয়েছে। পরবর্তীতে লিখিত আকারে অভিযোগ নেওয়া হয়েছে। গ্রাম্য আদালতে বিচারের প্রক্রিয়ায় রয়েছে।