ছবি:সংগৃহীত
গত ২৩ সেপ্টেম্বর ডুলাহাজরা ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়া এলাকায় অভিযানের সময় ডাকাতের ছুরিকাঘাতে মারা যান লেফটেন্যান্ট তানজিম ছারোয়ার নির্জন। ঘটনাটি এমন সময় ঘটেছে যখন বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে পার্বত্য এলাকায় সেনাবাহিনীর অভিযান চলছিলো। যে কারণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য এই হত্যাকাণ্ডের মোটিভ খুঁজে বের করা ছিলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
তবে শনিবার ২৮ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের চকরিয়ায় সেনা কর্মকর্তা তানজীম ছারোয়ার নির্জন হত্যা মামলার আরও দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের পর মূল ঘটনাটি জানা গেছে। শনিবার ভোর ৫টার দিকে চকরিয়া উপজেলার কাহারিয়া ঘোনা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- চকরিয়া ডুলাহাজারা ইউনিয়নের রিজার্ভপাড়া এলাকার আবদুল মালেকের ছেলে নাছির উদ্দিন (৩৮) ও ডুলাহাজারা মাইজপাড়া এলাকার মৃত নুরুল আলমের ছেলে এনামুল হক (৫০)। অভিযানের সময় তাদের কাছ থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র ও তিন রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। এছাড়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কারণও জানিয়েছে নাছির।
ইতিমধ্যে আইএসপিআর জানিয়েছিলো, ঘটনার দিন পূর্ব মাইজপাড়া গ্রামে ডাকাতির খবর আসে। খবর পেয়ে চকরিয়া আর্মি ক্যাম্পের সদস্যরা সেখানে পৌঁছান এবং লেফটেন্যান্ট নির্জন ৭-৮ সদস্যের ডাকাত দলটির কয়েকজনকে তাড়া করেন । এ সময় ডাকাতরা নির্জনের ঘাড়ে ছুরিকাঘাত করলে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে শনিবার আটক দুই আসামী ইতিমধ্যেই হত্যাকাণ্ডে নিজেদের প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। স্বীকারোক্তিতে জানা গেছে, গত ২৩ সেপ্টেম্বর লেফটেন্যান্ট তানজিম সেই অভিযানে ডাকাত নাছিরকে সশস্ত্র অবস্থায় ধরে ফেলেন। তখন নাছিরকে ছাড়ানোর জন্য আরও ২-৩ জন ডাকাত তানজিমের উপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে নাছির সুযোগ বুঝে তানজিমের গলায় ছুরি বসিয়ে দেন, ফলে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান।
র্যাব-১৫ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, নাছিরকে চকরিয়া পৌরসভার কাহারিয়া ঘোনায় তার ফুপু শাশুড়ির বাড়িতে আত্মগোপন অবস্থায় পাওয়া যায়। সে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি এড়াতে মোবাইল ফোনের ব্যাটারি সরিয়ে রেখেছিলেন এবং ধরা পড়ার পর ভুয়া পরিচয় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। তবে তিনি বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে ভয় সৃষ্টি করে চলমান অভিযানকে বাধাগ্রস্ত করা।
এই হত্যাকাণ্ডের পর নাছির ও এনামুল বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে এবং সমুদ্রপথে বিদেশ পালানোর পরিকল্পনা করেছিল। তবে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যৌথ বাহিনী ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এর আগে, ঘটনার দিন গ্রেপ্তার হয়েছিল মামলার প্রধান আসামি মো. বাবুলসহ ৬ ডাকাতকে। এছাড়া বৃহস্পতিবার রাতে একজন গ্রেপ্তার করা হয়।