
ছবি:সংগৃহীত
ফুটফুটে শিশু ফাতেমা খাতুন। মাত্র ১৮ দিন বয়স। ঘুমিয়ে আছে ছোটমণি নিবাসের বিছানায়। তার ডান হাতের হাড় ভেঙে গেছে। সেখানে প্লাস্টার করা। শিশু নিবাসে ধীরে ধীরে সুস্থতার দিকে যাচ্ছে ফাতেমা। ঘুমের ঘরে কখনও হাসছে, আবার কখনও খেলছে। গত শুক্রবার ময়মনসিংহের ত্রিশালে সড়ক দুর্ঘটনার সময় বিস্ময়করভাবে জন্ম নেয়া এই নবজাতকের ঠাঁই হয়েছে রাজধানীর আজিমপুর সরকারি ছোটমনি নিবাসে।
ফাতেমা ছোটমনি নিবাসে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। একটু নড়াচড়া করে আবার খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ছে।
ছোটমনি নিবাসে থাকা আরও ২৮ জন শিশুর মতো সেও পরম মমতায় বেড়ে উঠছে। শিশু নিবাসে থাকা শিশুরা জানে না তাদের বাবা-মা কোথায়। এই শিশুরা পরিচয়হীন। কেউ রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল আবার কেউ স্বজন হারানো। ময়মনসিংহের ত্রিশালে ট্রাকচাপায় স্বামী, অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও তাদের সন্তান নিহত হলেও বেঁচে আছে দুর্ঘটনার সময় অন্তঃসত্ত্বা নারীর পেট ফেটে জন্ম নেয়া এই নবজাতকটি। শুক্রবার দুপুরে নবজাতকটিকে সঙ্গে নিয়ে আসেন তার বোন জান্নাত ও দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু। তারা সকাল ১১টার দিকে একটি মাইক্রোবাসে করে শিশুটিকে নিয়ে ময়মনসিংহ থেকে দুপুরে ঢাকার শিশু নিবাসে পৌঁছে শিশুটিকে ছোটমনি নিবাস ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করেন।
আজিমপুর ছোটমনি নিবাসের উপ-তত্ত্বাবধায়ক জুবলি বেগম রানু বলেন, ফাতেমা ভালো আছে। ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছে। সে কাঁদছে কম। বেশির ভাগ সময় খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে থাকে। তাকে দুধ খাওয়ানো হচ্ছে। আমাদের কাজই এই সেবা দেয়া। চিকিৎসা, সেবাসহ যা কিছু প্রয়োজন তার জন্য আমরা সবসময় প্রস্তুত। আমাদের এখানে বাচ্চাদের পরিচর্যা করার জন্য সবসময় কয়েকজন করে কর্মী থাকছেন। রাতেও দু-তিনজন করে থাকেন। ফাতেমার চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়ার জন্য তাকে আজ ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাবো।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রতিষ্ঠান) মো. কামরুল ইসলাম চৌধুরী মানবজমিনকে বলেন, শিশুটিকে আমরা লালন-পালন ও সুস্থ করে তোলার জন্য এখানে নিয়ে এসেছি। ছোটমনি নিবাসে মোট ২৮ জন শিশু আছে। ৭ বছর পর্যন্ত ফাতেমা এখানে থাকতে পারবে। পরিবার চাইলে তার আগে তাকে নিয়ে যেতে পারবে। শিশুটির জন্য দুধসহ সব ধরনের খাবারের ব্যবস্থা আছে।
উৎস: মানবজমিন