Banglar Chokh | বাংলার চোখ

স্ত্রীকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালানোর অভিযোগে বরগুনায়  স্বামীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

কোর্টকাচারী

এম আর অভি, বরগুনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৮:৫৮, ১১ জুন ২০২৪

সর্বশেষ

স্ত্রীকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালানোর অভিযোগে বরগুনায়  স্বামীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

ছবি: বাংলার চোখ

যৌতুক দিতে অস্বীকার করায় বরগুনা সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নে শিউলি (১৯) নামের এক গৃহবধুকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালানোর অভিযোগে স্বামীসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে । (১১জুন) মঙ্গলবার বিকালে মামলার বাদী নিহত শিউলির পিতা ওছমান জানান, আদালতের আদেশের পরে ৫ দিন অতিবাহিত হলেও থানায় এজাহার রুজু করছে না পুলিশ।মেয়ে হত্যার বিচার ও থানায় মামলা এজাহারভুক্তর দাবিতে এর পূর্বে (১০ জুন) রোববার সকালে বরগুনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে ব্যানার নিয়ে অনশনে বসেন নিহত শিউলির পিতা ওছমান হাওলাদার । এ সময় তিনি বলেন, যৌতুক দিতে অস্বীকার করায় আমার মেয়ে শিউলি কে তার স্বামী সাগর খান সহ অন্যান্য আসামিরা হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করছে । আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
গত ৬ জুন নিহত শিউলির স্বামী সাগর খান সহ ৫ জনকে আসামি করে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন শিউলির পিতা ওছমান হাওলাদার। মামলার অন্যান্য আসামিরা হলো নিহত শিউলির ননদ- মোসাঃ সীমা বেগম, শ্বশুর মোশাররফ খান, চাচা শ্বশুর লিটন খান, চাচী শ্বাশুড়ি মোসাঃ শাহিনুর। আসামি সাগর খান বরগুনা সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নে পাঁচ নং ওয়ার্ডের মোশারেফ খান এর ছেলে।
মামলার বিবরণে অভিযোগ করা হয় গত ৩১ মে রাত আনুমানিক ১০টায় অপরিচিত নাম্বার থেকে মামলা বাদী ওছমান হাওলাদারকে জানানো হয় আপনার মেয়ে শিউলি ১৯ কে যৌতুকের জন্য মারপিট করে শ্বাসরোধ করে মারিয়া ফালাইছে এবং লাশ গুম করার পাঁয়তারা করছে। ঘটনা জানতে পেরে আমি আসামি (মেয়ে জামাই )সাগর কে কল দিয়ে বিষয়টি জানতে চাইলে সে আমার মেয়ের মৃত্যুর কথা গোপন করে এবং মেয়ের সাথে কথা বলাইতে অস্বীকৃতী জানায়। আসামি সাগর খানের ( জামাইর) কথায় সন্দেহ জাগলে সে অন্য ২ ও ৫ নং আসামিকে কল করে। তাঁরাও মৃত্যুর কথা গোপন করে শিউলির সাথে কথা বলাতে অস্বীকৃতী জানায়। পরে সকল আসামির কথা সন্দেহ প্রবণ হলে সাক্ষীগনকে নিয়ে সে ১নং আসামি (জামাই)সাগরদের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। সে বরগুনা আসামি সাগরের বাড়িতে পৌছে দেখতে পায় তার মেয়ে শিউলির জানাজা নামাজ শেষে দাফনের প্রস্তুতি চলছে।  সে ডাক চিৎকার দিয়ে নিষেধ করিলে তাকে ধাক্কাধাক্কি করিয়া শান্ত করিয়া দাবাইয়া বুঝাইয়া দাফন সম্পন্ন করে। আসামি সাগর খান আমার কন্যা শিউলির স্বামী । ৩ বছর পূর্বে প্রেমের সম্পর্কের মাধ্যমে ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক তাদের বিবাহ হয়।  দাম্পত্য জীবনে তাদের ৮ মাস বয়সী একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বিবাহের পর থেকেই অন্যান্য আসামিদের প্রত্যক্ষ পরোক্ষ সহযোগিতায় আসামি সাগর খান যৌতুকের জন্য স্ত্রী শিউলিকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত। আসামি সাগর খান বিদেশে যাওয়ার জন্য তিন লক্ষ টাকা যৌতুক নিয়ে বিদেশ না গিয়ে গত ৩০ মে পুনরায় ব্যবসার জন্য আসামিরা ৩ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। আমি ও আমার মেয়ে শিউলি যৌতুক দিতে অস্বীকার করি। এতে ১নং আসামি সাগর ক্ষিপ্ত হয় রাগারাগি করে আমার মেয়ের ফোন কেটে দেয়। নিহত শিউলি শরিয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার নশাসন ব্যাপারী কান্দি গ্রামের ওছমান হাওলাদারের মেয়ে।
বাদীর আইনজীবী মোঃ ছগির হোসেন বলেন, বিচার প্রার্থীকে ন্যায় বিচার পাইয়ে দিতে , সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে  গত ৬ জুন শিউলি নামের এক গৃহবধুকে যৌতুকের জন্য স্বামী কর্তৃক হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টার অভিযোগে এনে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে  নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২০০০ সংশোধীত ২০০৩ / ১১(ক) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি  আমলে নিয়ে বরগুনা সদর থানাকে এজাহার করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। আদালতের আদেশের পরেও তবে কোন অজ্ঞাত কারণে ৫ দিনেও মামলাটি থানায় এজাহার রুজু হয়নি আমার জানা নেই।
বরগুনা থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত ) মোঃ আজিজুল রহমান এর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোন বলেন, এ ব্যাপারে আমি কোট পরিদর্শক কে নিয়ে জজ সাহেবর সাথে কথা বলতে আদালতে গিয়ে ছিলাম, বিচারক এজলাসে থাকায় কথা বলতে পারিনি, আপনি ওসি সাহেবর সাথে কথা বলেন।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়