ছবি:সংগৃহীত
ফ্রান্সে কী নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হচ্ছে! রোববার অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এমন প্রশ্ন সামনে এসেছে। অতি গুরুত্বপূর্ণ এই নির্বাচনে আধুনিক সময়ে প্রথম ক্ষমতার খুব কাছাকাছি অবস্থান করছিল উগ্র ডানপন্থিরা। ফলে রাজনীতিতে যে চাল দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন তা উল্টো বুমেরাং হতে পারে তার ও দলের জন্য। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তিনি ক্ষমতাও হারাতে পারেন। এমন এক কঠিন পরিস্থিতিতে রোববার ভোটগ্রহণ হয়। বড় বড় শহরগুলোতে স্থানীয় সময় রাত আটটা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হয়। এরপরই এক্সিট পোল বা বুথফেরত জরিপের ফল আসা শুরু হওয়ার কথা। ফলে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নির্বাচনের কোনো ফল পাওয়া যায়নি। অনলাইন বিবিসি লিখেছে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পার্লামেন্ট নির্বাচনে ব্যাপক জয় পায় উগ্রপন্থিরা। তাতে পিছিয়ে পড়ে ম্যাক্রনের দল।
ফলে তিনি দেশবাসীকে বিস্মিত করে আকস্মিকভাবে পার্লামেন্ট নির্বাচন ঘোষণা করেন। তারপর থেকেই জনমত জরিপে এগিয়ে ছিল মেরি লা পেন এবং জর্ডান বারডেলার ন্যাশনাল র্যালি (আরএন)।
দেশটিতে অতি গুরুত্বপূর্ণ এই নির্বাচনে চার কোটি ৯০ লাখ ভোটার ভোট দেয়ার কথা। ৫৭৭ আসনের মধ্যে রোববার যারা নির্বাচিত হবেন তারা বাদে যারা শতকরা ৫০ ভাগ ভোট অর্জনে ব্যর্থ হয়েছেন তাদের মধ্যে দ্বিতীয় দফার ভোট হবে আগামী সপ্তাহে রোববার। এবার নির্বাচনে প্রচারণার জন্য প্রার্থীরা সময় পেয়েছেন মাত্র ২০ দিন। এতে সুবিধা পেয়েছে আরএন দল। কারণ, তারা আগে থেকেই অভিবাসন, অপরাধ, অনিরাপত্তা, ট্যাক্স কর্তন ইস্যু নিয়ে মাঠে ছিল। সেই ইস্যুকে দ্রুততার সঙ্গে সামনে এনে প্রচারণা চালিয়েছে তারা। যদি আরএন বিজয়ী হয় তাহলে প্রধানমন্ত্রী হতে চাইবেন জর্ডান বারডেলা। নির্বাচনের প্রথম রাউন্ডেই তার দল বহু ডজন আসনে জিতবেন বলে তিনি আস্থাশীল। তবে জর্ডান বারডেলা বলেছেন, যদি তার দল পার্লামেন্টে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ অর্থাৎ কমপক্ষে ২৮৯টি আসন পায়, তাহলেই তিনি এই দায়িত্বে আসবেন। তা না হলে ফ্রান্সে হবে ঝুলন্ত পার্লামেন্ট এবং তাতে অচলাবস্থা দেখা দেবে।
স্থানীয় সময় রোববার রাত থেকেই প্রথম রাউন্ডের ফল আসা শুরু হওয়ার কথা। ফলে ন্যাশনাল র্যালির বিরোধীরা দ্বিতীয় দফার ভোটে কাকে সমর্থন দেবে, তা নির্ধারণের জন্য সময় পাবে। তারা চেষ্টা করবে ন্যাশনাল র্যালি যাতে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পায়। আবার তারা বামপন্থি জোট নিউ পপুলার ফ্রন্ট গড়ে তোলার আশা করছে। বিবিসি বলছে, ইপসোসের ব্রাইস টেইনটুরিয়েরের জরিপ অনুযায়ী, নির্বাচনে তিনটি দল দ্বিতীয় দফার নির্বাচনের জন্য যোগ্য হতে পারে। তখন ২৫০ আসনে ভোট হতে পারে। ওদিকে ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাদে এবার পার্লামেন্ট নির্বাচন করেছেন। তিনি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রনের বস এবং মেন্টর ছিলেন। ওলাদে প্রার্থী হয়েছেন নিউ পপুলার ফ্রন্ট থেকে। আগাম নির্বাচন ঘোষণা দেয়ায় ম্যাক্রনের জুয়া খেলার কারণে তার মিত্ররা ক্ষিপ্ত হয়েছেন।