Banglar Chokh | বাংলার চোখ

সরকারকে হেয় করতে এমরানকে দিয়ে নাটক সাজিয়েছে মার্কিন দূতাবাস   

মহানগর

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২২:৩৫, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সর্বশেষ

সরকারকে হেয় করতে এমরানকে দিয়ে নাটক সাজিয়েছে মার্কিন দূতাবাস   

ফাইল ছবি

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলের পদ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার কয়েকঘণ্টার মধ্যেই সপরিবারে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসে অবস্থান নেন এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া। যে মার্কিন দূতাবাসের সামনে দিয়ে সর্বসাধারণের চলাচল সময়ই নিয়ন্ত্রিত থাকে, সেখানে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সপরিবারে এমরান কিভাবে ঢুকলেন? তবে কি নাটকের প্লট সাজানো ছিলো আগে থেকেই?
 
নাটকের প্লট সাজানো ছিলো আগেই। শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) এমরানকে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারির পরপরই শুরু হয় সেই নাটকের মঞ্চায়ন। শুক্রবার সকালে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, জনস্বার্থে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

আইনমন্ত্রী বলেন, তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। নিয়ম হলো, সরকারি চাকরিতে থাকলে প্রতিষ্ঠান প্রধানের অনুমতি নিয়ে প্রেসের সঙ্গে কথা বলতে হয়। তিনি সেই শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। এছাড়াও তিনি সরকারি পদে থেকে সরকার সম্বন্ধে মিথ্যা কথা বলেছেন।

এরপরই সামনে আসে নাটকের ক্লাইমেক্স। ঢাকার বারিধারায় মার্কিন দূতাবাসের আশপাশে বরাবরই থাকে কড়া নিরাপত্তা। এমনকি জন সাধারণের চলাচলও নিয়ন্ত্রিত সেখানে। অথচ একাধিক গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়, পরিবার ও তল্পিতল্পাসহ দূতাবাসে ঢুকে পড়েছেন এমরান। তিনি নিজেও সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে দূতাবাসে যাওয়ার কথা জানান। অথচ ড. ইউনূসের পক্ষে সরাসরি অবস্থান নেয়া কিংবা বিবৃতি দেয়া বহু বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী এবং সাধারণ মানুষ কোনো ধরণের ভয়ভীতি এবং শঙ্কা ছাড়াই দেশে অবাধে চলাচল করছেন।

এ প্রসঙ্গে সিনিয়র সাংবাদিক অজয়দাশ গুপ্ত বলেন, এই ঘটনার পরে পাঁচ-ছয় দিন চলে গেছে, কিন্তু তার জীবনের প্রতি হুমকিস্বরূপ কোনো ঘটনা ঘটেনি। সরকারবিরোধী কথা বলে অনেকেই বাংলাদেশে দিব্যি বসবাস করছেন, তারা তো যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে না। মার্কিন দূতাবাসের সীমানার বাইরের ফুটপাত দখল করে বিশেষ ধরনের ব্যারিকেড দিয়ে রাখা হয়েছে। বহু ধরনের নজরদারি আছে সেখানে। তাহলে তিনি যেটা করলেন তা কি সাজানো নাটক ছিল? এমন প্রশ্ন উঠবেই।

গেলো ৪ সেপ্টেম্বর অধ্যাপক ড. ইউনূসের শ্রমিক ঠকানোর মামলার বিষয়ে স্বপ্রণোদিত হয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন তখনকার ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া।

তিনি বলেন, আমি মনে করি ড. ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তার সম্মানহানি করা হচ্ছে এবং এটা বিচারিক হয়রানি।

রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন না নিয়ে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেন এমরান। এমনকি উচ্চ আদালতে অবকাশকালীন ছুটি চলায় সেদিন কোর্টে তার কোনো কাজও ছিলো না। শুরু থেকেই প্রশ্ন ছিলো, তবে কি শুধুমাত্র বিতর্ক সৃষ্টি করা কিংবা কোনো পক্ষের স্বার্থ উদ্ধারের নাটক করার জন্যই সেদিন গণমাধ্যমের সামনে এসেছিলেন এমরান?

৫ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এম এ আমিন উদ্দিন গণমাধ্যমে বলেন, সংবাদ মাধ্যমে কথা বলার আগে কোনো অনুমতি নেন এমরান। এমনকি তাকে ইউনূসের পক্ষে বিবৃতি দেয়ার জন্যও অফিসিয়ালি কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। নির্দিষ্ট কাউকে খুশি করতে এমরান বিবৃতি দিয়েছিলেন বলে জানান অ্যাটর্নি জেনারেল।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, অব্যাহতি পাওয়ার কয়েকঘণ্টার মধ্যেই সপরিবারে মার্কিন দূতাবাসে অবস্থান নেয়া এবং সেখানে বসে গণমাধ্যমে কথা বলা প্রমাণ করে আদতে এমরান কারো স্বার্থ উদ্ধারের নাটকের চরিত্র হিসেবেই কাজ করে যাচ্ছেন।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাবেক সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ বলেন, এমরান আহম্মদের এই পদক্ষেপের সঙ্গে বিশেষ মহল জড়িত থাকতে পারে। তারা অনেক সময় এইসব কাজ করায়। এটি একটি নীলনকশার অংশ। এমরান অ্যাটর্নি জেনারেল হলেও সেখানে ঢুকতে পারতেন না, যদি এটা নীলনকশার অংশ না হতো। তাকে ভিতরে ঢুকতে দেয়া হতো না।

চার ঘণ্টার নাটকের পর রাতে মার্কিন দূতাবাস থেকে বেরিয়ে এমরান তার লালমাটিয়ার বাসায় চলে যান বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ।

উৎসঃ সময় নিউজ

সর্বশেষ

জনপ্রিয়