Banglar Chokh | বাংলার চোখ

ভাঙা সড়কে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল, সংস্কারের উদ্যাগ নেই 

সারাবাংলা

টাংগাইল  প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৮:২৫, ২২ মে ২০২৪

সর্বশেষ

ভাঙা সড়কে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল, সংস্কারের উদ্যাগ নেই 

ছবি: বাংলার চোখ

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার ভাতকুড়া গ্রামের ভাতকুড়া-মুশুদ্দি গ্রামীণ সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় সড়কটি এখন মৃত্যুর ফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে কয়েক ইউনিয়নবাসীর। দিনের বেলায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করা গেলেও রাতে চলাচলে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শত শত মানুষের। সড়কে বড়-বড় গর্তের পাশাপাশি পাঁকা অংশ ভেঙে নদীতে চলে গেছে। এতে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে পথচলা। এরপরও সড়কটি সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেই।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পথচারীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি সংস্কার না করায় এমন পরিস্থিতি। সড়কের বেশ কয়েকটি অংশে চলাচল একেবারেই কষ্টকর। এতে অটোরিকশা ভ্যান, ইজিবাইক, মোটরসাইকেলসহ অন্য যানবাহন চলাচল করছে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে। স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য হাঁট-বাজারে নিতে দ্বিগুণ অর্থ ব্যয় হচ্ছে।

শুক্রবার সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার পাইস্কা ইউনিয়নের ভাতকুড়া গ্রাম দিয়ে সড়কটি চলে গেছে সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক (বর্তমান এমপি)’র গ্রামে। সড়কটি ধরে প্রতিদিন চলাচল করছে বীরতারা, বলিভদ্র, মুশুদ্দি ও পাইস্কা ইউনিয়নের হাজারো মানুষ। সড়কের পাশে বৈরান নদী। ভাতকুড়ার নজরুলের দোকান হতে ব্রিজ পর্যন্ত সড়কের সিংহভাগ অংশ ভেঙে নদীতে চলে গেছে। ভাঙা অংশের পাশ দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাওয়া-আসা করতে হচ্ছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ চলাচলকারীদের। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সবাইকে।

স্থানীয় বাসিন্দা মুকুল হোসেন বলেন, ‘সড়কটির অবস্থা একেবারেই নাজুক। এটি জনগুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ সড়ক। এমন খারাপ সড়ক উপজেলায় আর নেই। রাতের বাইসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় নদীতে পড়ে আমার ডান কাঁধের জয়েন্ট ছেড়ে গিয়েছিল। আগের মত কোনো কাজকর্ম করতে পারি না।’

ভাতকুড়া গ্রামের ফারুক হোসাইন বলেন, ‘৪/৫বছর আগে সড়কটি ভাঙন শুরু হয়। উপজেলা থেকে তখন কিছু মেরামতের কাজ করা হয়েছিল। গ্রামবাসী বিষয়টি বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিদের বারবার অবহিত করলেও গুরুত্ব দেননি। তাই গ্রামবাসী ১০/৫০ টাকা চাঁদা তুলে ভাঙা অংশগুলো মেরামত করে চলাচলের উপযোগী করেন।’
অপর বাসিন্দা বেলাল হোসেন ও আসাদুজ্জামান বলেন, ‘ভাতকুড়ার খোকা মিয়া রাতে চলাচলে সময় নদীতে পড়ে মুত্যু হয়েছে। এই সড়ক থেকে নদীতে পড়ে কমপক্ষে ৫০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে। রাতে কেও বিপড়ে পড়লে তাঁর কোনো শেষ থাকে না। সড়কের বেহাল দশায় বর্তমান এমপি তাঁর গ্রামের বাড়ি মুশুদ্দিতে এখন বিকল্প সড়কে চলাচল করেন।’

অটোরিকশা চালক আব্দুল আলিম ও রাসেদুল ইসলামসহ আরও অনেকেই জানান, ‘সড়কটি এখন মরণ ফাঁদ। রাতে অন্ধকারে চলাচল করতে গিয়ে লোকজন দুর্ঘটনায় পড়েন।’

সবজির বেপারী আ. রহিম মিয়া বলেন, ‘উপজেলায় সবচেয়ে বেশি সবজি উৎপাদন হয় মুশুদ্দি ও বলিভদ্র ইউনিয়নে। এই ভাঙা সড়কে তেমন কোনো গাড়ি চলাচল করতে চায় না।’  

জানতে চাইলে পাইস্কা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বাবুলের ভাষ্য, ‘এই সড়ক দিয়ে শুষ্ক মৌসুমে কোনো মতে চলাফেরা করা যায়। বিষয়টি সাবেক মন্ত্রী ড. রাজ্জাকও জানেন। তবে আমরা চেষ্টা করছি এটি সংস্কারের।’

ধনবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম মন্ডল বলেন, ‘সড়কটি সংস্কারে প্রকল্প গ্রহণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট ফাইল পাঠানো হয়েছে।’

বিষয়টি নজরে আনা হলে টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ও  শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী শামছুন নাহার চাঁপা বলেন, ‘ওই সড়কটির বিষয়ে আমার জানা রয়েছে। জনভোগান্তি এড়াতে সড়কটি সংস্কারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ

জনপ্রিয়