নিহত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. সুমন মিয়া। ছবি: সংগৃহীত
নরসিংদীর রায়পুরায় আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রচারণা চালানোর সময় ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. সুমন মিয়াকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষ প্রার্থী আবিদ হাসান রুবেল ও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
দুপুরে দিকে চশমা প্রতীকের প্রার্থী আবিদ হোসেন রুবেল সমর্থকদের নিয়ে মিরেরকান্দি গ্রামে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। এসময় একটি মাইক্রোবাস থেকে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় রুবেলের কর্মী রহমত উল্লাহ, আব্দুল মোমেন, সজিব মিয়া ও শাকিল আহত হন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরে উভয় গ্রুপের সংঘর্ষ হয় এবং ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমন আহত হন। সন্ধ্যায় তাকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আজ বুধবার দুপুরে উপজেলার পাড়াতলী ইউনিয়নের মিরেরকান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সুমন নরসিংদী সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুপুর ২টার দিকে চশমা প্রতীকের প্রার্থী আবিদ হোসেন রুবেল সমর্থকদের নিয়ে মিরেরকান্দি গ্রামে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। এসময় একটি মাইক্রোবাস থেকে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় রুবেলের কর্মী রহমত উল্লাহ, আব্দুল মোমেন, সজিব মিয়া ও শাকিল আহত হন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরে উভয় গ্রুপের সংঘর্ষ হয় এবং ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমন আহত হন। সন্ধ্যায় তাকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত সুমনের বাবা ও চরসুবুদ্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন বলেন, 'রুবেল আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।'এসময় কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
চশমা প্রতীকের প্রার্থী আবিদ হাসান রুবেল বলেন, 'দুপুরে আমরা মিরেরকান্দি গ্রামে প্রচারণা চালাচ্ছিলাম। সুমন ও তার সমর্থকরা আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে পালিয়ে যায়। পরে মিরেরবাজারে তাদের সঙ্গে আমার লোকজনের হাতাহাতি হয়।'
সুমনকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ বিষয়ে প্রশ্ন করলে উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান তিনি।
এ বিষয়ে রায়পুরা উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. খান নুর উদ্দিন মো. জাহাঙ্গীর বলেন, 'সন্ধ্যায় সুমনকে নিহত অবস্থায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। নাক দিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তিনি মারা গেছেন। সুমনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে এবং পুলিশ এ বিষয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করছে।'
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ইকবাল হাসান বলেন, 'পাড়াতলী ইউনিয়নে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে শুনেছি এবং একজন প্রার্থী মারাও গেছেন। আমরা ঘটনাস্থলে লোক পাঠিয়েছিলাম। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) মো. ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, 'দুই প্রার্থীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় এবং অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে এবং পরিবেশ এখন শান্ত রয়েছে। নিহত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি। আইনি প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে।'
আগামী ২৯ মে তৃতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দেশের ৮ বিভাগের ১০টি অঞ্চলের ১১১ উপজেলায় সেদিন ভোটগ্রহণ হবে। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠপর্যায়ে প্রচারণায় ব্যস্ত রয়েছেন প্রার্থীরা।