Banglar Chokh | বাংলার চোখ

এফডিসিতে নিতে দেবে না রহমান সোহানের মরদেহ

বিনোদন

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:৪৫, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সর্বশেষ

এফডিসিতে নিতে দেবে না রহমান সোহানের মরদেহ

সোহানুর রহমান সোহান ফাইল ছবি

পরিচালক সোহানুর রহমান সোহানের মরদেহ তার প্রিয় কর্মস্থল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) নেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন তার বড় মেয়ে সৃষ্টি রহমান।

বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে আরেক খ্যাতিমান পরিচালক কাজী হায়াতের মাধ্যমে সোহানের বড় মেয়ে এই বার্তা পাঠিয়েছেন। ফলে প্রিয় কর্মস্থলে গুণী এই নির্মাতার মরদেহ শেষবারের মতো আর যাচ্ছে না।

ক্ষোভ প্রকাশ করে সৃষ্টি বলেন,যখন বাবা অসুস্থ ছিলেন তখন চলচ্চিত্রাঙ্গণের কেউ তেমন খোঁজখবর নেয়নি। সেজন্য মায়ের ইচ্ছা ছিল,মারা গেলেও যেন মরদেহ এফডিসিতে না নেয়া হয়। এবং সেটাই হবে।

এদিকে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন জানান, ইসলামিক রীতি অনুযায়ী পরিচালক সোহানের পরিবার তাড়াতাড়ি মরদেহ দাফন করতে চান। তাই রাতেই মরদেহ টাঙ্গাইলে তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে। ভোরে জানাজা শেষে ফজরের পরপরই মরদেহ দাফন করা হবে। 

সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন খ্যাতিমান চলচ্চিত্র পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান (৫৬)। উত্তরার নিজ বাসায় ঘুমের মধ্যে মারা যান তিনি। তাকে ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নেয়া হলে সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সোহানের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির উপমহাসচিব কবিরুল ইসলাম রানা।

  তিনি বলেন, সোহান দুপুরে খাবার খেয়ে নিজ বাসায় ঘুমাচ্ছিলেন। সন্ধ্যার দিকে বাড়ির লোকজন তাকে ডাকাডাকি করে কোনো সাড়া পাচ্ছিল না। এরপর দরজা খুলে উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নেয়া হলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।
 
পরিচালক সোহানের মৃত্যুর খবরটি ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক প্রকাশ করেছেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা। এর আগে মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্ট্রোকে মৃত্যুবরণ করেন সোহানুর রহমান সোহানের স্ত্রী প্রিয়া।
 
নব্বই দশকের শুরুর দিকের কথা, সিনেমাপ্রেমী বাঙালিদের জন্য তখন এক সোনালী সময়। সেই উজ্জল সময়ে আলোর ঝলকানি হয়ে চলচ্চিত্রের জন্য নতুন এক ক্ষেত্র তৈরি করে ফেলে ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’। বাঙালি দর্শক পায় অসাধারণ এক সিনেমা। আরও পায় দুই প্রিয়মুখ মৌসুমী ও সালমান শাহ। এর মধ্য দিয়ে মধ্যবিত্ত দর্শক রুচিতে নতুন এক মাত্রা যুক্ত করে।
 
 এই অসাধারণ রূপান্তরের কাণ্ডারি তরুণ পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান। প্রণয়ধর্মী সিনেমা নির্মাণ করে নিজের আলাদা গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করেছিলেন। তারকা তৈরির কারিগর ছিলেন তিনি। সালমান শাহ, মৌসুমী থেকে শুরু করে শাকিব খান- অনেকেই তারকা হয়েছেন তার হাত ধরেই।
 
সোহানুর রহমান সোহানের কর্মজীবন শুরু হয়েছিল ১৯৭৭ সালে, পরিচালক শিবলী সাদিকের সহকারী হিসেবে। ১৯৮৮ সালে মুক্তি পায় সোহানুর রহমান সোহান নির্মিত প্রথম সিনেমা ‘বিশ্বাস অবিশ্বাস’। ১৯৯৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ সিনেমার মাধ্যমে খ্যাতি লাভ করেন এ নির্মাতা।

কেয়ামত থেকে কেয়ামতের পর ‘আমার দেশ আমার প্রেম', 'স্বজন', 'আমার ঘর আমার বেহেশত', 'অনন্ত ভালোবাসা', ‘কোটি টাকার প্রেম’ সহ অনেকগুলো ব্যবসা সফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন তিনি। কর্মজীবনে টানা দুইবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির মহাসচিব ও দুইবার সহসভাপতি ও একবার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন সোহানুর রহমান সোহান। তার মৃত্যুতে কান্ডারি হারালো চলচ্চিত্রাঙ্গন।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়