Banglar Chokh | বাংলার চোখ

 নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যার পর বালিচাপা দিলো ইসরায়েলি সেনারা

আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৮:৫৫, ২৮ মার্চ ২০২৪

সর্বশেষ

 নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যার পর বালিচাপা দিলো ইসরায়েলি সেনারা

ছবি:সংগৃহীত

আত্মসমর্পণ করতে সাদা কাপড় উড়িয়েছিলেন ফিলিস্তিনি নিরস্ত্র নিরীহ কয়েকজন ব্যক্তি। কিন্তু বাঁচার কোনো সুযোগ না দিয়ে ইসরাইলি সেনাদের গুলিতে তাদের বুক এফোড় ওফোড় হয়ে গেল। মারা গেলেন তারা। সেই মৃতদেহ ইসরাইলি সেনারাই বুজডোজার দিয়ে গাজা সিটির কাছেই মাটিচাপা দিয়েছে। এমন ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ার পর নিন্দার ঝড় উঠেছে। এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে হামাস। তারা বলেছে, ইসরাইল যে কি মাত্রায় ফ্যাসিবাদী চালাচ্ছে এটা তার আরেকটি প্রমাণ। তারা জায়নবাদী অপরাধ করছে। এটা তার প্রমাণ। লেবাননের দক্ষিণে যোদ্ধাগোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সঙ্গে ইসরাইলের যুদ্ধ তীব্র হয়েছে।

এতে ইসরাইলের আলাদা দুটি হামলায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৯ জন। এ নিয়ে ৭ই অক্টোবর রকেট হামলার পর থেকে কমপক্ষে ৩২,৪৯০ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরাইল। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৭৪,৮৮৯ জন। গাজায় হাসপাতালসহ কোনো মানবিক স্থানকেও এখন আর বাদ রাখছে না ইসরাইলি আগ্রাসীরা। তাদের আগ্রাসনে এ যুদ্ধে কমপক্ষে ১৪,০০০ শিশু নিহত হয়েছে। আরও হাজার হাজার শিশু অপুষ্টি, পানিশূন্যতা এবং মানসিক ভয়াবহ ক্ষত নিয়ে বেঁচে আছে। গাজার উত্তরে কামাল আদওয়ান হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলছেন, প্রতিদিন অসংখ্য শিশু যাচ্ছে তাদের কাছে। এসব নবজাতকের বয়সের সঙ্গে তাদের ওজন ভারসাম্য বজায় রাখে না। অক্টোবর থেকে সেখানে অপুষ্টি এবং পানিশূন্যতায় মারা গেছে কমপক্ষে ২৭টি শিশু। 
এ অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ সহায়তা পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন ওই চিকিৎসকরা। ওই হাসপাতালের একজন চিকিৎসক বলেন, কামাল আদওয়ান হাসপাতালের আইসিইউয়ের অংশ হওয়ার কারণে, স্পষ্টতই আমরা দেখতে পাচ্ছি ভয়াবহ অপুষ্টি এবং পানিশূন্যতা নিয়ে ভোগা নবজাতকের ঢল নেমেছে হাসপাতালে। এর মূল কারণ, ফর্মুলা মিল্কের অনুপস্থিতি। এর ফলে শিশুরা ভয়াবহ পানিশূন্যতায় ভুগছে। পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিভিন্ন এসিটিক বিশৃঙ্খলা। সব শেষে তারা মারা যাচ্ছে। তিনি বলেন, প্রতিদিন গড়ে দুই থেকে তিনটি শিশু আমাদের কাছে আসে কম ওজন নিয়ে। ওদিকে রাফা থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ বলছেন, আল শিফা হাসপাতালের চারপাশে এমন ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে যে কেউ এখন আর ওই এলাকাটিকে চিনতে পারবেন না। তিনি বলেন, গাজায় চলমান নৃশংসতার ফলে এখানে থাকা খুব কঠিন হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে গত ২৪ ঘণ্টা রাফায় অবস্থান করা সবচেয়ে বেশি কঠিন। এখানে গণহত্যা চালানো হয়েছে।


 আবাসিক ভবন এবং কৃষিজমি ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। আল শিফা হাসপাতালের ভিতরে এবং বাইরে অব্যাহতভাবে অভিযান চালাচ্ছে ইসরাইলি সেনারা। এর পাশেই একটি পুরো আবাসিক এলাকাকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন কেউ ওই এলাকা চিনতে পারবেন না। ইউরো-মেড হিউম্যান রাইটস মনিটর ইসরাইলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে। তারা বলেছে, ইসরাইলি সেনারা এক সপ্তাহ ধরে আল শিফা হাসপাতালের ভিতরে এবং আশপাশে সরাসরি গুলি করে হত্যা করেছে ১৩টি শিশুকে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত সদস্যদের দেয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এই গ্রুপটি বলেছে, লোকজন ঘরের ভিতর বসে থাকা অবস্থায়ও তাদের ওপর ভয়াবহভাবে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। আল শিফায় তাদের অভিযান অব্যাহত আছে।

 ঘটনার শিকার ব্যক্তিরা নিরাপদ কোনো রুট দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাদের ওপরও হামলা চালানো হচ্ছে। ইউরো-মেড’কে ইসলাম আলি সালুহা বলেন, রোববার তার ৯ বছর বয়সী ছেলে আলি এবং ৬ বছর বয়সী ছেলে সাঈদ মুহাম্মদ শিখাকে গুলি করে হত্যা করেছে ইসরাইলিরা। আল শিফার কাছে রাস্তার ওপর বিক্ষিপ্তভাবে তাদের মৃতদেহ ছড়িয়ে ছিল। স্থানীয় মিডিয়ার রিপোর্টে বলা হয়েছে, আল শিফা হাসপাতালে ফিলিস্তিনি সাংবাদিক মুহাম্মদ আবু শাকিলকে গুলি করে হত্যা করেছে ইসরাইলিরা। তারা ঝড়ো গতিতে আল শিফা হাসপাতালে প্রবেশ করে। সঙ্গে নেয় ট্যাঙ্ক। ১৮ই মার্চ তারা সেখানে ভারি গুলি বর্ষণ করে। তখন থেকেই হাসপাতাল ও এর আশপাশের এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয় তারা। 

সূত্র:আল জাজিরা

সর্বশেষ

জনপ্রিয়