.
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌরশহরের জাতীয় দৈনিক পত্রিকার হকার ও উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের দৌলতপুর হরহরিয়া গ্রামের দিনমজুর মো. সামসুদ্দিন মন্ডলের ছেলে ইদ্রিস আলী (৪৩) কিডনি রোগে আক্রান্ত। অর্থের অভাবে বাড়ীতেই শুয়ে বসে দিন কাটছে তার। তবে কোনো দিন অর্থ জোগার হলে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রের দুই-একটি ট্যাবলেট ও ক্যাবসুল কিনে খাচ্ছেন। প্রায় ছয় মাস আগে পত্রিকা হকার ইদ্রিস আলীর কিডনি রোগ ধরা পড়ে। এরই মধ্যে তার দুইটি কিডনিই প্রায় অকেজো হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসকরা।
ইদ্রিস আলী পেশায় একজন পত্রিকা হকার। দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে ফুলবাড়ী পৌরশহরের বিভিন্ন বাসাবাড়ী ও প্রতিষ্ঠানে সকাল হলেই ঢাকা থেকে প্রকাশিত জাতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলো পাঠকের কাছে পৌঁছে দিয়ে আসছেন। তার এই যৎসামান্য আয়ে স্ত্রী ও দুই কন্যাসহ চার সদস্যের সংসার চলছিল। তার দুই কন্যাও প্রতিবন্ধী। এরমধ্যে বড় মেয়ে ইরিনা আক্তার (১৭) বাক প্রতিবন্ধী। সে এ বছর খয়েরবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান শাখা থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। আর ছোট মেয়ে ইয়াসমিন আক্তার ইভা (১০) জন্ম থেকে শারীরিক প্রতিবন্ধী। সে পার্শ্ববর্তী দলদলিয়া বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী অটিষ্টিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। কিন্তু যাতায়াতের অর্থ জোগান দিতে না পারায় সেই স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়ে বাড়ীর সংলগ্ন দৌলতপুর মধ্যমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ছে। কিন্তু একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটি অসুস্থ হয়ে পড়ায় সংসার চালানো ও তার চিকিৎসার খরচ মেটানো দায় হয়ে পড়েছে। বাড়ীর গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগিসহ সহায় সম্বল বলতে যা ছিল, বিক্রি করে এতদিন চিকিৎসাখরচ জুগিয়েছেন। অনেক ধারদেনাও হয়েছে। দেনাও পড়েছে পত্রিকা এজেন্ট মোন্নাফ আলীর কাছে।
অসুস্থ ইদ্রিস আলীর স্ত্রী রাবিয়া বেগম বলেন, ইদ্রিস আলীর কিডনি রোগ ধরা পড়ার পর দুই দফায় ২২ দিন রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ ওষুধ কিনতে গিয়ে এক লাখ টাকারও বেশি খরচ হয়ে গেছে। এরমধ্যে রংপুর গিয়ে কিডনি চিকিৎসকের ব্যক্তিগত চেম্বারে চিকিৎসা নিয়েছেন। এ সময় তার রক্ত শূন্যতা ধরা পড়ায় তাকে দুইদিন পর পর ‘এ’ পজেটিভ (অ+) গ্রুপের রক্ত দিতে হচ্ছে। টাকার অভাবে বাড়ীতেই চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খাওয়াসহ স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে রক্ত নিতে হচ্ছে।
ইদ্রিস আলী বলেন, চিকিৎসরা তাকে ডায়ালাইসিস করতে বলেছেন। কিন্তু ডায়ালাইসিস করতে মাসে দুই লাখ টাকা লাগবে। আর ডায়ালাইসিস করার আগে ফিস্টুলার পরীক্ষা করার জন্য ২০ হাজার টাকা খরচ হবে। ফিস্টুলা পরীক্ষা এবং ডায়ালাইসিস করার জন্য কোনো টাকা না থাকায় তার পক্ষে কোনো কিছুই করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বাড়ীতে বসে নিজের চিকিৎস এবং স্ত্রী ও প্রতিবন্ধী দুই কন্যার অনাগত ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তায় দিন কাটছে তার। তিনি না থাকলে তার প্রতিবন্ধী দুই মেয়ের ভবিষ্যত কি হবে? এ নিয়ে চিন্তার অন্ত নেই তার। এজন্য তিনি বাঁচতে চান। বাঁচার জন্য আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন।
পত্রিকা হকার ইদ্রিস আলী তার চিকিৎসার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ দেশের বিত্তবান দানশীল ব্যক্তিদের কাছে আর্থিক সহায়তার আবেদন জানিয়েছেন। আর্থিক সহায়তা পাঠানো যাবে মো. ইদ্রিস আলী (বিকাশ নং-০১৭৩৭ ৬৮১৯৫৪ অথবা নগদ নং-০১৭৯৬ ১৭৭৮৯০)।