আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০২:৪৬, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবি :সংগৃহীত
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে আসন্ন নির্বাচনের ঠিক আগে বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে সামরিক সরকার তীব্র হামলা চালাচ্ছে। এর মধ্যেই বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী পশ্চিম রাখাইন প্রদেশের একটি হাসপাতালে বোমা বর্ষণ করেছে সামরিক জান্তার যুদ্ধবিমান। ভয়াবহ এই হামলায় ঘটনাস্থলে অন্তত ৩১ জন নিহত এবং ৬৮ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন সেখানকার ত্রাণকর্মীরা। খবর তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ডের।
জানা গেছে, ম্রাউক-ইউ শহরের হাসপাতালে বুধবার(১০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সামরিক সরকারের একটি যুদ্ধবিমান বোমাবর্ষণ করে। ঘটনাস্থলে থাকা ত্রাণকর্মী ওয়াই হুন আউং এই হামলাকে ভয়াবহ উল্লেখ করে বলেন, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। হামলার পর রাতেই হাসপাতালের বাইরে অন্তত ২০টি ঢাকা দেওয়া মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
সংঘাত পর্যবেক্ষকদের ভাষ্যমতে, ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে এবং জান্তা সরকার প্রতি বছরই বিমান হামলার সংখ্যা বাড়িয়েছে। এর মধ্যেই সেনাবাহিনী আগামী ২৮ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে, যা চলমান সংঘাত থেকে উত্তরণের পথ বলে তারা দাবি করছে।
অন্যদিকে, রাখাইনভিত্তিক জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) জানিয়েছে, তারা তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় কোনোভাবেই ভোট হতে দেবে না। এই এলাকা পুনরুদ্ধারের জন্যই জান্তা সরকার হামলা জোরদার করেছে। সংঘাত পর্যবেক্ষকরা বলছেন, রাখাইনের ১৭টি টাউনশিপের মধ্যে ১৪টিই এখন আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে, যারা জান্তা সরকারের জন্য শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে উঠে এসেছে।
আরাকান আর্মির স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, বুধবার রাত ৯টার দিকে হওয়া এই বিমান হামলায় হাসপাতালের ১০ জন রোগী ঘটনাস্থলেই মারা যান।
এদিকে, রাখাইন অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী কর্তৃক অবরুদ্ধ থাকায় সেখানে তীব্র মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) আগেই সতর্ক করেছিল যে অঞ্চলে ক্ষুধা ও পুষ্টিহীনতা নাটকীয়ভাবে বেড়ে গেছে। এই ভয়াবহ হামলা নিয়ে জান্তা সরকারের কোনো মুখপাত্রের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সূত্র: টিআরটি ওয়ার্ল্ড