ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৩:০৪, ২৬ নভেম্বর ২০২৫
ঢাকায় নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লটজ। ছবি -বাংলার চোখ
বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং অংশগ্রহণমূলক হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লটজ। তিনি বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের অর্থ হলো জনগণের ভোট দেওয়ার পূর্ণ সুযোগ নিশ্চিত করা এবং কাউকে অংশগ্রহণ থেকে বঞ্চিত না করা। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব ভোটারের অংশগ্রহণ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করাই এর মূল শর্ত। আমি মনে করি, আমরা সেটিরই প্রস্তুতি দেখতে পাচ্ছি।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ডিপ্লোমেটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
জার্মান রাষ্ট্রদূত বলেন, নির্বাচন পরিচালনা শান্তিপূর্ণ হওয়া জরুরি। রাজনৈতিক দলগুলো যেন শান্তিপূর্ণ নির্বাচন প্রচারণা করতে পারে, সহিংসতা থেকে বিরত থাকে। ভোটাররা যাতে ভয়মুক্ত পরিবেশে মত প্রকাশ করতে পারেন এবং বিদেশে থাকা ভোটারদের অংশগ্রহণসহ ভোটের সঠিক গণনা হয়। এটাই মোটামুটি প্যাকেজ- যা আমি দেখতে চাই।
উচ্চ ভোটদানের হার নির্বাচনকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তুলবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তার মতে, বিভিন্ন দেশে ভোটদানের হার সাধারণত ৫০ থেকে ৮০ শতাংশের মধ্যে থাকে। যত বেশি ভোট, তত ভালো। ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ ভোটদানও ইতিবাচক সংকেত। অন্তর্বর্তী সরকার দেশবাসীকে একটি আনন্দময় নির্বাচন উপহার দেবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
শেখ হাসিনার বিচার প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বলেন, যারা ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে তাদের বিচার হওয়া জরুরি হলেও জার্মানি কোনোভাবেই ফাঁসির দণ্ড সমর্থন করে না। নির্বাচনের পর রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ বা রিকনসিলিয়েশন অব্যাহত থাকবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বর্তমানে বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য উপযুক্ত বলে মন্তব্য করে রাষ্ট্রদূত বলেন, আসন্ন নির্বাচনের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে আরও ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়িক সম্পর্কের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি হবে।
রুডিগার লটজ বলেন, বাংলাদেশ সিকিউরিটি সেক্টর, আইনের শাসন, শ্রম পরিবেশ, প্রশাসনিক কাঠামোসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। স্বচ্ছতা বৃদ্ধি, দুর্নীতি হ্রাস এবং দক্ষ শাসন প্রতিষ্ঠার স্পষ্ট ইচ্ছা আন্তর্জাতিক অংশীদাররা লক্ষ্য করছেন।
তিনি উল্লেখ করেন, পড়াশোনার জন্য বাংলাদেশ থেকে জার্মানিতে শিক্ষার্থী যাওয়ার হার বাড়ছে। বাংলাদেশি আবেদনকারীরা সঠিক নথি দিলে ভালো হয়। অনেকেই ভুয়া নথি দেওয়ায় যাচাই করতে সমস্যায় পড়তে হয় আমাদের যাচাইকারীদের।
তিনি আরও বলেন, আমরা অবশ্যই বাংলাদেশের স্মার্ট তরুণদের আনতে চাই। আমরা ভোকেশনাল ট্রেনিং দিতে চাই।
বাংলাদেশ জার্মান বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কারণ হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ দেশের ৪০ মিলিয়ন মধ্যবিত্ত সমাজ অবশ্যই জার্মান বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের কারণ হবে। ইউরোপের অনেক দেশেও এত বড় মধ্যবিত্ত অংশ নেই। বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ জার্মানিতে দ্বিতীয় প্রধান রপ্তানিকারক দেশ।