ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২২:৩৬, ২৪ নভেম্বর ২০২৫
.
জীবনরক্ষাকারী ওষুধের মূল্য নির্ধারণ বিষয়ে সরকারের ক্ষমতা সীমিত করে ১৯৯৪ সালে জারি করা সার্কুলারকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষার স্বার্থে জীবন রক্ষাকারী সব ওষুধের মূল্য সরকারকে নির্ধারণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান এবং বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চের পূর্ণাঙ্গ রায় সোমবার প্রকাশিত হয়েছে। চলতি বছরের ২৫শে আগস্ট হাইকোর্ট রায় দেন।
সিনিয়র এডভোকেট মনজিল মোরসেদ আদালতে বলেন, রায়ের কপি প্রকাশের পর তিনি বলেন, আদালত রায়ে রুল নিষ্পত্তি করে কতিপয় নির্দেশনা দিয়েছেন, যার মধ্যে অন্যতম হলো বাংলাদেশের নাগরিকদের জীবনরক্ষাকারী ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা সরকারের হাতে থাকবে। জীবনরক্ষাকারী ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা ওষুধ কোম্পানিগুলোর থাকবে না। আদালত রায়ে ওষুধ (নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশের বিধান, যা বর্তমানে ওষুধ ও কসমেটিক্স আইন, ২০২৩ এর সুনির্দিষ্ট বিধান অনুসারে সরকার কর্তৃক গঠিত কমিটির মাধ্যমে মূল্য নির্ধারণের বিষয়ও উল্লেখ করেছে।
রায়ে আদালত বলেন, ১৯৮২ সালের ওষুধ (নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ, যা বর্তমানে ওষুধ ও কসমেটিক্স আইন, ২০২৩-এ প্রতিস্থাপিত হয়েছে, তার বিধান অনুযায়ী ওষুধের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ সরকারের এখতিয়ার। সেই নির্দেশনা লঙ্ঘন করে ২৬শে ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৪-এর সার্কুলারে সরকার ১১৭টি ওষুধ ছাড়া বাকি সব ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের হাতে দিয়ে যে সিদ্ধান্ত নেয়- তা আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
রিটের পক্ষে সিনিয়র এডভোকেট মনজিল মোরসেদ আদালতে বলেন, ওষুধ যেহেতু জীবনরক্ষার অপরিহার্য উপাদান, মূল্য বৃদ্ধি ও নিয়ন্ত্রণহীনতা সরাসরি নাগরিকের বেঁচে থাকার অধিকারের সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই সরকারের ক্ষমতা সীমিত করার ওই সার্কুলার মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি।
ওষুধের মূল্য নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত ওই সার্কুলারকে চ্যালেঞ্জ করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) ২০১৮ সালে জনস্বার্থে একটি রিট পিটিশন দায়ের করে। রুল জারির পর দীর্ঘ শুনানি শেষে বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল নিষ্পত্তি করে এ নির্দেশনা দেন।