ঢাকা, শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫

২৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

রাঙামাটিতে বিজিবির অভিযানে সাড়ে ৮৭ লাখ টাকার ভারতীয় সিগারেট জব্দ

আলমগীর মানিক,রাঙামাটি থেকে

প্রকাশ: ০২:১৮, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫

রাঙামাটিতে বিজিবির অভিযানে সাড়ে ৮৭ লাখ টাকার ভারতীয় সিগারেট জব্দ

ছবি :সংগৃহীত

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলায় বিশেষ অভিযানে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় সিগারেট জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) ভোররাতে পরিচালিত অভিযানে ৪১ বিজিবির একটি টহল দল পাহাড়ি সড়ক থেকে ৩৬ হাজার ২৩০ প্যাকেট সিগারেট জব্দ করে।

চোরাচালানকারীরা বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে গেলেও বিশাল পরিমাণ অবৈধ মালামাল উদ্ধার করতে সক্ষম হয় টহল দল।

বিজিবি জানায়, রাত ১টা ১৫ মিনিটে কাপ্তাই উপজেলার বড়ইছড়ি-ঘাগড়া সড়কের বটতলীপাড়া এলাকায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এ বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানের নেতৃত্ব দেন ৪১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল কাওসার মেহেদী (সিগন্যালস)।

জব্দকৃত ৩৬,২৩০ প্যাকেট ভারতীয় সিগারেটের মধ্যে রয়েছে, ওরিস: ৩,৫০০ প্যাকেট; ইজি লাইট: ১৫,২৩০ প্যাকেট; প্যাট্রন: ১৭,৫০০ প্যাকেট। জব্দকৃত অবৈধ এই সিগারেটগুলোর মোট আনুমানিক সিজার মূল্য ৮৭ লাখ ৫২ হাজার ৯০০ টাকা বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

অভিযানের সময় বিজিবির টহল দল ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পাচারকারী দল তৎক্ষণাৎ চারদিক ছুটে পাহাড়ি অন্ধকারে লুকিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর আশপাশে অনুসন্ধান করলেও কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে বিজিবি জানিয়েছে, পাচারকারীদের পরিচয় শনাক্তে গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।

জব্দকৃত ভারতীয় সিগারেট বর্তমানে কাপ্তাই ব্যাটালিয়নের হেফাজতে রয়েছে। শিগগিরই এগুলো কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হবে। কাস্টমস নিয়ম অনুযায়ী এসব মালামাল নিলাম বা ধ্বংসের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হতে পারে।

৪১ বিজিবি ব্যাটালিয়ন জানায়, সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান রোধে তারা “জিরো টলারেন্স” নীতি অনুসরণ করছে। সম্প্রতি এই অঞ্চলে কয়েক দফা অভিযানে ভারতীয় বিড়ি, সিগারেট, মাদক এবং অন্যান্য অবৈধ পণ্য জব্দ করা হয়েছে।

বিজিবি সূত্র জানায়, সীমান্তবর্তী ও দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল কাপ্তাইয়ের চারপাশে চোরাকারবারিরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ধরনের ভারতীয় পণ্য নিয়ে অবৈধ পথ ব্যবহার করে। পাহাড়ি রাস্তা, ছোট নদীপথ এবং জনবসতিহীন এলাকার সুযোগ কাজে লাগিয়ে চক্রগুলো ভারতীয় সিগারেটসহ নানান ধরনের পণ্য পাচারের চেষ্টা করে থাকে।

সাম্প্রতিক সময়ে পার্বত্য এলাকায় ভারতীয় সিগারেট চোরাচালান বেড়ে যাওয়ায় বিজিবি নজরদারি, টহল ও গোয়েন্দা কার্যক্রম আরও জোরদার করেছে। বিজিবির মতে, এসব ভারতীয় সিগারেট দেশে অবৈধভাবে প্রবেশ করলে দেশের রাজস্ব হারানোর পাশাপাশি স্থানীয় বাজারে চোরাচালানের মাধ্যমে অন্যায্য প্রতিযোগিতা তৈরি হয়। তাছাড়া সিগারেটের মান নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকায় জনস্বাস্থ্যের জন্যও এটি ঝুঁকিপূর্ণ। ভবিষ্যতে এ ধরনের অভিযান আরও জোরদার করা হবে এবং কোনোভাবেই চোরাচালানকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না জানিয়ে স্থানীয় জনগণকে চোরাচালানের বিরুদ্ধে সচেতন হতে এবং সন্দেহজনক চলাচল দেখলে বিজিবিকে খবর দেওয়ারও আহ্বান জানায় ব্যাটালিয়ন কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুন