ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫

১ পৌষ ১৪৩২, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

বিপ্লবকে শিক্ষক হিসেবে চায়না রাঙামাটির সাধারণ শিক্ষার্থীরা 

আলমগীর মানিক,রাঙামাটি থেকে

প্রকাশ: ০৩:০৫, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫

বিপ্লবকে শিক্ষক হিসেবে চায়না রাঙামাটির সাধারণ শিক্ষার্থীরা 

ছবি -বাংলার চোখ

নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ ও হিজাব নিয়ে কটুক্তির অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষক বিপ্লব কুমার শীলকে শিক্ষক হিসেবে রাঙামাটি কলেজে দেখতে চায় না কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার প্রক্রিয়া অনিশ্চিত হওয়া এবং তাকে রক্ষার অপচেষ্টার প্রতিবাদে রোববার রাঙামাটি সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

পূর্বের কর্মস্থল ফেনী সরকারি কলেজে এক ছাত্রীকে হেনস্তা ও হিজাব নিয়ে কটূক্তিকারি শিক্ষক বিপ্লব কুমার শীলের বিরুদ্ধে সেখানে স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে বিপ্লবের বিরুদ্ধে কোনো আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ না করে উল্টো তাকে প্রমোটেড বদলি দিয়ে রাঙামাটি সরকারী কলেজে পাঠানো হয়েছে। রোবববার সকালে অভিযুক্ত বিপ্লব কুমার সরকার রাঙামাটি সরকারী কলেজে যোগদান করতে আসলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তার সামনেই বিক্ষোভ করতে থাকে।

বিক্ষোভে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটি সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি মোঃ ওমর মোরশেদ, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি ইমাম হোসেন ইমু, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি জ্ঞান চাকমা, কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শাকিল, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ চাকমাসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এতে বিপুল সংখ্যক সাধারণ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থী নেতৃবৃন্দ বলেন, “একজন শিক্ষক যদি নীতি-নৈতিকতাহীন আচরণ করেন এবং নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলেন, তাহলে তাকে কোনোভাবেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাখা যায় না। অভিযুক্ত শিক্ষক বিপ্লব কুমার শীলের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ থাকলেও এখনো দৃশ্যমান কোনো বিচারিক পদক্ষেপ না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম উদ্বেগ ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।”

তারা আরও বলেন, “হিজাব নিয়ে কটুক্তি করা শুধু একজন শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত বিশ্বাসের ওপর আঘাত নয়, এটি ধর্মীয় স্বাধীনতা ও মানবাধিকারেরও লঙ্ঘন। একজন শিক্ষক থেকে এমন আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা অবিলম্বে তার দৃষ্টান্তমূলক বিচার এবং কলেজ থেকে স্থায়ীভাবে অপসারণ চাই।”

বক্তারা অভিযোগ করেন, অভিযুক্ত শিক্ষককে রক্ষা করতে একটি মহল সক্রিয়ভাবে অপচেষ্টা চালাচ্ছে, যা শিক্ষাঙ্গনের পরিবেশকে আরও কলুষিত করছে। তারা বলেন, “যদি দ্রুত সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত না করা হয়, তাহলে শিক্ষার্থীরা আরও কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবে।”

মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল শেষে শিক্ষার্থীরা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ নাসিমুল হকের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। পাশাপাশি জেলা প্রশাসকের কাছেও পৃথকভাবে স্মারকলিপি জমা দিয়ে দ্রুত প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপদ শিক্ষা পরিবেশ নিশ্চিত করা প্রশাসনের দায়িত্ব এবং এ ঘটনায় গাফিলতি হলে তার দায়ভার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে।
 

আরও পড়ুন