আলমগীর মানিক,রাঙামাটি থেকে
প্রকাশ: ২০:৩৯, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবি -বাংলার চোখ
পাহাড়ের একমাত্র উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম দ্রুত সম্পাদনের দাবি ও নানামুখী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জুলাই স্মৃতিস্তম্বের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নুরুল আলমের সঞ্চালনায় মানব বন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ফিশারিজ ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী উম্মে ছালমা লাবন্য; জেমি বড়ুয়া, সিএসই ডিপার্টমেন্টের ইফতেখার, অর্জুন মন্ডল, আক্তারুজ্জামান অপু, নুরুল আলম ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্টের ইফতেখার হামীম প্রমুখ।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থী নেতৃবৃন্দ বলেন, বিগত ২০০১ সালে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাশ হওয়ার অন্তত ১৫ বছর পরে প্রতিষ্ঠানটিতে পাঠদান শুরু হয়। এরপর নানামুখি সংকট; আঞ্চলিকদলগুলোর চাঁদাবাজি, সশস্ত্র মহড়ার মাধ্যম উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত করে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে দেয়া হয়নি।
বিগত ২০২৪ সালে শেষের দিকে বর্তমান ভিসি যোগদান করার পর সরকারের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করে বড় বড় বেশ কয়েকটি ভবন নির্মান কাজ শুরু করে এবং পাঠদান নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়।
এতে করে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিতের পাশাপাশি একটি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তার অবয়ব ফিরে পেতে শুরু করেছে। বিষয়টি একটি কুচক্রি মহলের ভালো লাগছেনা মন্তব্য করে মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরকে কাজে লাগিয়ে তথাকথিত এনজিওর মাধ্যমে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে ধ্বংসের লক্ষ্যে উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে।
শিক্ষার্থী নেতৃবৃন্দ বলেন, রাঙামাটি একটি পাহাড়ি এলাকা; এখানে পরিবেশ রক্ষার দায়িত্বে থাকা পরিবেশ অধিদপ্তর নিজের অফিসটিও পাহাড় কেটে বানিয়েছে। তারা দাবি করেন, রাবিপ্রবিকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতে হলে উন্নয়ন প্রকল্পে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা চলবে না। একটি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে পূর্ণাঙ্গ রুপদানে বাধা প্রদান বন্ধ না করলে রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজপথে কঠোর আন্দোলনে নামার হুশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে মানববন্ধন থেকে।
প্রসঙ্গত: রাঙামাটির রাবিপ্রবিতে ছাত্রাবাসসহ চারটি ভবন নির্মান কাজে পাহাড় কাটার অভিযোগে ইতিমধ্যেই হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হলে হাইকোর্ট থেকে রাবিপ্রবি’র ভিসি থেকে শুরু করে রাঙামাটির ডিসি-এসপি ও পরিবেশ অধিদপ্তরসহ বাস্তবায়নকারি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরকে জবাব দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনার পর পরিবেশ অধিদপ্তর নিজেদের রক্ষায় রাবিপ্রবির প্রকল্প পরিচালক, নির্বাহী প্রকৌশলী ও ঠিকাদারদের আসামী করে রাঙামাটি কোতয়ালী থানায় মামলা দায়ের করে। এই মামলায় ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট্যরা রাঙামাটির কগনিজেন্স আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন বলে জানাগেছে।
উপরোক্ত বিষয়ে প্রেক্ষিতে বুধবার আয়োজিত মানববন্ধন থেকে শিক্ষার্থীরা বলেন, “রাবিপ্রবির চলমান উন্নয়ন কার্যক্রমে কোনো অযৌক্তিক বাধা দেওয়া হলে আমরা রাজপথে কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো।” শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজ অব্যাহত রাখা, ষড়যন্ত্রমূলক প্রতিবন্ধকতা বন্ধ করা এবং দ্রুত ক্যাম্পাস সম্প্রসারণের দাবিও জানান।