আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭:৪৯, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫
গোপন তথ্যটি ফাঁস করে দিয়েছে ফ্রান্সের একটি গণমাধ্যম। সংগৃহীত
ইসরাইলের কুখ্যাত অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এলবিট সিস্টেমসের সঙ্গে প্রায় ২.৩ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্রচুক্তি স্বাক্ষর করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। ফরাসি অনুসন্ধানী গণমাধ্যম ইন্টেলিজেন্স অনলাইন এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত মাসে অস্ত্র বিক্রির ঘোষণা দিলেও ক্রেতা দেশের নাম গোপন রেখেছিল এলবিট সিস্টেমস। ইন্টেলিজেন্স অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, সেই ক্রেতা দেশটি সংযুক্ত আরব আমিরাত।
এলবিট সিস্টেমস ইসরাইলের অন্যতম শীর্ষ সামরিক প্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। তারা উন্নতমানের ড্রোন প্রযুক্তি, বিমানভিত্তিক সেন্সর ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউএই এলবিটের জে-মিউজিক নামের অত্যাধুনিক বিমান সুরক্ষা ব্যবস্থা কিনেছে। এই প্রযুক্তি লেজারভিত্তিক সিস্টেম ব্যবহার করে ভূমি থেকে নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্রের সেন্সর অকার্যকর করতে সক্ষম। চুক্তির আওতায় এসব সিস্টেম ইউএই-এর ভেতরেই উৎপাদন করা হবে, যা একটি যৌথ প্রকল্প হিসেবে বাস্তবায়িত হবে। জানা গেছে, এরই মধ্যে ইসরাইলি সরকারের অনুমোদন পেয়েছে চুক্তিটি।
ফরাসি গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, চুক্তিটি বাস্তবায়নে সময় ধরা হয়েছে আট বছর। এটি ইসরাইলের ইতিহাসে দ্বিতীয় বৃহত্তম অস্ত্র রপ্তানি চুক্তি। তবে প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির সংবেদনশীলতার কারণে চুক্তির বহু তথ্য এখনও গোপন রাখা হয়েছে।
মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও অক্সফাম এই চুক্তির তীব্র সমালোচনা করেছে। তাদের আশঙ্কা, এ ধরনের অস্ত্র বিক্রি বেসামরিক জনগণের ক্ষতি এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনে সহায়তা করতে পারে।
এদিকে আমিরাতের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তারা মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের বিভিন্ন মিলিশিয়াকে সমর্থন দিয়ে আসছে। যারা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত। এর মধ্যে সুদানের র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস অন্যতম।
২০২০ সালে তথাকথিত আব্রাহাম চুক্তির মাধ্যমে সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ার পর থেকেই ইসরাইলি প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ইউএই-তে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। এলবিট সিস্টেমস ও ইসরাইল অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ ইতোমধ্যে আবুধাবিতে তাদের প্রতিনিধি কার্যালয় খুলেছে। পাশাপাশি ইউএই বিনিয়োগ করেছে ইসরাইলি অ্যান্টি-ড্রোন প্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান থার্ড আই-তেও।
গাজায় ইসরাইলের গণহত্যামূলক যুদ্ধের পর ঘোষিত এক নড়বড়ে যুদ্ধবিরতির মধ্যেই এই চুক্তির খবর সামনে এলো। ওই যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইসরাইল ক্রমেই একঘরে হয়ে পড়েছে। তবে তারা অস্ত্র বিক্রিতে অনেক ধাপ এগিয়েছে।
সম্প্রতি জার্মানির কাছে ৩.৫ বিলিয়ন ডলারের অ্যারো-৩ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং রোমানিয়ার কাছে ২.২ বিলিয়ন ডলারের স্পাইডার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিক্রি করেছে দেশটি। এবার একটি মুসলিম সংখ্যাগরিস্ট দেশ কিনছে ইসরাইলের বড় অস্ত্র।
সূত্র:মিডল ইস্ট আই