ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:৩৭, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবি :সংগৃহীত
শুভ বড়দিন আজ। খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব (ক্রিসমাস)। খ্রিষ্ট ধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিষ্ট দুই হাজার বছর আগে এ দিনে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের বেথলেহেম শহরের এক গোয়ালঘরে জন্মগ্রহণ করেন। খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রচার এবং মানব জাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালনা করার জন্য যিশুখ্রিষ্ট জন্ম নিয়েছিলেন।
সারা বিশ্বের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মতো বাংলাদেশের খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরাও আজ ধর্মীয় আচার, প্রার্থনা ও আনন্দ-উৎসবের মাধ্যমে দিনটি উদযাপন করছেন। আনন্দ-হাসি-গানে আজ প্রাণ মিলেছে প্রাণে। গির্জায় গির্জায় হচ্ছে প্রার্থনা। মানবতার কল্যাণে যিশুখ্রিষ্টের শান্তির বাণী ছড়িয়ে যাচ্ছে মানুষে মানুষে। আলোকসজ্জা, ক্রিসমাস ট্রি আর সান্তাক্লজের উপহারে মেতে উঠেছে শিশুরা।
দিবসটি উপলক্ষ্যে আজ (বৃহস্পতিবার) সরকারি ছুটির দিন। বড়দিনে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, সব ধর্মের মূল মর্মবাণীই মানুষের সেবা ও কল্যাণ। যিশুখ্রিষ্টের আদর্শ ও দীক্ষা থেকে শিক্ষা নিয়ে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে দেশ ও জনগণের কল্যাণে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশপ্রেম ও মানবতার মহান আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ধর্ম-বর্ণ-সম্প্রদায় নির্বিশেষে সবার জন্য একটি বৈষম্যহীন, ন্যায়ভিত্তিক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে কাজ করে যাচ্ছে।
এদিকে বড়দিন উপলক্ষ্যে গির্জাগুলো সাজানো হয়েছে রঙিন বাতিতে। সকালে সেখানে বিশেষ প্রার্থনা দিয়ে দিনের শুরু হয়েছে। গির্জায় ধর্মীয় সংগীতের পাশাপাশি নানা আয়োজন করেছেন যিশু ভক্তরা। ঘরে ঘরে জ্বালানো হয়েছে রঙিন আলো। সাজানো হয়েছে ক্রিসমাস ট্রি। যিশু গোয়ালঘরে জন্মেছিলেন বলে তার অনুসারীরা ঘরে ঘরে প্রতীকী গোশালা তৈরি করেছেন। বড়দিনের উৎসব ঘিরে আনন্দমুখর আয়োজনে পিছিয়ে নেই দেশের বড় বড় শহরের অভিজাত হোটেলগুলো।
বড়দিন উপলক্ষ্যে আতশবাজি, পটকা ফোটানো, ফানুস ও গ্যাস বেলুন ওড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। বুধবার বিকালে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, ভাবগম্ভীর ও উৎসবমুখর পরিবেশে বড়দিন উদ্?যাপনের লক্ষ্যে ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ২৬ ডিসেম্বর সকাল ৬টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগর এলাকায় সব ধরনের আতশবাজি, পটকা ফুটানো, ফানুস ও গ্যাস বেলুন ওড়ানো নিষিদ্ধ করা হলো।
বুধবার র্যাব সদর দপ্তর থেকে পাঠানো বিশেষ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উৎসব নির্বিঘ্নে করতে ২৩ ডিসেম্বর থেকেই সারা দেশে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছে ও পর্যাপ্তসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করেছেন তারা। যে কোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে র্যাবের একটি কমান্ডো দল। গুরুত্বপূর্ণ গির্জা, উপাসনালয়গুলোতেও সার্বক্ষণিক তৎপরতা চালাচ্ছে র্যাবের ডগ স্কোয়াড এবং বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিট।
এদিকে বুধবার রাজধানীর কাকরাইল চার্চ (গির্জা) পরিদর্শন করেছেন রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম। এ সময় তিনি জানান, বড়দিন উপলক্ষ্যে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বিভিন্ন গির্জায়। একই সঙ্গে বড়দিন ঘিরে কোনো ধরনের নিরাপত্তা শঙ্কা বা আশঙ্কা নেই বলেও জানান তিনি।