চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০০:১৮, ৪ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবি -বাংলার চোখ
কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে বিএসএফ কর্তৃক পুশইন করা গর্ভবতী ভারতীয় নারী সোনালী খাতুনসহ ৬ ভারতীয় নাগরিককে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার আলীনগর এলাকা থেকে আটকের পর আদালত থেকে জামিন পেলেও মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নিজ দেশ ভারতে ফিরতে পারবেন না বলে আদেশ দিয়েছেন আদালতের বিজ্ঞ বিচারক। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) আদালতে হাজিরা শেষে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী একরামুল হক পিন্টু।
তিনি জানান, চলতি বছরের আগস্ট মাসে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আলীনগর থেকে আটক ছয় ভারতীয় নাগরিকের বিরুদ্ধে সীমান্তে অনুপ্রবেশ আইনে মামলা দায়ের করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। পরে শুনানী শেষে ১ ডিসেম্বর সোমবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (তৃতীয় আদালত) মো. আশরাফুল ইসলাম ছয় ভারতীয় নাগরিকের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
এদিকে জেলা কারাগার থেকে বের হয়ে সেই রাতে তারা আত্মীয়ের বাড়িতে উঠেছিলেন। তবে দেড় ঘণ্টা পর পুলিশ আবারও তাদের হেফাজতে নেন। পরে ২ ডিসেম্বর মঙ্গলবার আদালতের নির্দেশে আসামিদের জিম্মায় নেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার নয়াগোলা এলাকার বাসিন্দা ফারুক হোসেন। তবে বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সকালে নিয়মিত হাজিরা শেষে তারা আবারও আত্মীয়ের বাসায় ফিরে যান। এদিকে মামলাটি এখনো আদালতে বিচারাধীন থাকায় আদালত তাদের দেশে ফেরার অনুমতি দেননি। ফলে জামিনে মুক্ত হলেও তাদের বাংলাদেশেই অবস্থান করতে হবে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত।
এদিকে নিজ দেশে ফিরতে না পারায় হতাশা প্রকাশ করেছেন ভারতীয় নাগরিকরা। তারা বলছেন, বিএসএফ আমাদের জোড় করে ধরে এনে বাংলাদেশে পুশইন করেছে। এখানে আমাদের কোন অপরাধ না থাকলেও আইনের চোখে আমরা দোষী। তবে আদালতের মামলাটি নিষ্পত্তি হলে দ্রুত নিজ দেশ ভারতে ফেরার আকুতিও জানিয়েছেন ছয় ভারতীয় নাগরিক।
ভারতীয়রা নাগরিকরা হলেন- পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলার পাকুর এরাকার দানিশ শেখ (২৮), তার স্ত্রী সোনালি বিবি (২৬), সন্তান সাব্বির শেখ (৮), সুইটি বিবি (৩৩) ও তার দুই সন্তান কুরবান দেওয়ান (১৬) ও ইমাম দেওয়ান (৬)। তবে সাব্বির শেখ ও ইমাম দেওয়ান কারাগারে বন্দি থাকলেও মামলার আসামি ছিলেন না।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২০ আগস্ট বুধবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের আলীনগর থেকে ৬ ভারতীয়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের কুড়িগ্রামের একটি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পুশইন করে বিএসএফ। পরে তাদের বিরুদ্ধে সীমান্তে অনুপ্রবেশ আইনে মামলা দায়েরের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে ওই ছয়জনের মধ্যে দুইজন শিশু হওয়ায় মামলায় তাদের আসামি করা হয়নি।