ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ২২:৫১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
ফাইল ছবি
হঠাৎ করে ওপেন মার্কেট সেল (ওএমএস) কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে দরিদ্র মানুষেরা। ডিলাররা ক্রেতাদের জানিয়ে দেন, মামলার কারণে বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) থেকে ওএমএস কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
এতে চাল ও আটা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে করতে খালি হাতে ফিরে যান হতদরিদ্র ক্রেতারা। কেউ কেউ সরকারের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে গালমন্দ করতে থাকেন। এই চিত্র বুধবার ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে।
ঢাকা রেশনিংয়ের আওতাধীন ডিলারদের দুই গ্রুপের মধ্যে বিরোধ ও এ সংক্রান্ত উচ্চ আদালতে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশনায় রাজধানীর একাধিক ওএমএস কেন্দ্রে আটা ও চাল বিক্রি বন্ধ রয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নগরীর হাজারো হতদরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ।
তবে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, আদালতের নির্দেশনার কারণে বেশ কিছু কেন্দ্রে চাল-আটা বিক্রি বন্ধ রয়েছে। আগামী রোববার থেকে সমাধান না হওয়া পযর্ন্ত বিকল্প ব্যবস্থাপনায় ওএমএস চালু রাখবে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
খাদ্য সচিব মো. ফিরোজ সরকার গণমাধ্যমকে বলেন, ডিলারদের নিজেদের ঝামেলার কারণে মামলা হয়েছে। আদালতের নির্দেশনায় বুধবার মামলার কারণে কিছু কেন্দ্রে ওএমএস কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। সমস্যার সমাধান না হওয়া পযর্ন্ত আগামী রোববার থেকে বিকল্প ব্যবস্থাপনায় ওইসব কেন্দ্রে ওএমএস চলবে।
বুধবার রাজধানীর কয়েকটি ওএমএস কেন্দ্র সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন ওএমএস পয়েন্টে আটা বিক্রি বন্ধ রয়েছে। এক পয়েন্ট থেকে আরেক পয়েন্ট ঘুরেও প্রয়োজনীয় আটা ও চাল কিনতে পারছেন না ক্রেতারা। অনেক স্থানে ঝুলছে নোটিশ—‘পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ওএমএস কার্যক্রম বন্ধ।’
ফলে হঠাৎ করেই খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় পড়েছেন দিনমজুর, রিকশাচালক, গৃহকর্মীসহ স্বল্পআয়ের মানুষ। বিশেষ করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর এমন সিদ্ধান্তে সাধারণ জনগণের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
বাজারে চাল ও আটার দাম এমনিতেই ঊর্ধ্বমুখী, এরমধ্যে ওএমএস বন্ধ থাকায় সংকট আরও প্রকট হয়েছে বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীরা।
একাধিক ওএমএস ক্রেতা বলেন, ওএমএসের আটা কিনে কোনোরকমে সংসার চালাই। এখন দোকান বন্ধ। খোলা বাজারে আটা কিনলে খরচ দ্বিগুণ হয়ে যায়। আমাদের কথা কেউ ভাবছে না। বাজারে আটার দাম প্রায় দ্বিগুণ। প্যাকেট আটর দাম তো প্রায় তিনগুণ। ভুক্তভোগী হতদরিদ্রদের দাবি, ক্ষুধার কাছে সব সমস্যা নিরর্থক। তারা দ্রুত ওএমএস কার্যক্রম চালুর দাবি জানিয়েছেন।
মালিবাগ বাজার ওএমএস ডিলার সায়েম আহমেদ বিজয় বলেন, ওএমএসের ব্যাপক চাহিদা। বিশেষ করে আটার চাহিদা বেশি। বরাদ্দ না আসায় বুধবার থেকে কেন্দ্র বন্ধ রাখতে হয়েছে। জানি না কতদিন এ পরিস্থিতি চলবে। মানুষ আমাদের পাশাপাশি সরকারকে গালিগালাজ করছে।
পশ্চিম রামপুরার ১৬৬/৭, উলনের ওএমএস ডিলার তারিকুল আনোয়ার বলেন, জনস্বার্থ রক্ষায় আইনি জটিলতা নিরসন কওে রাজধানীতে ওএমএস কার্যক্রম দ্রুত চালু করার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। কারণ হতদরিদ্র মানুষের ক্রয়ের সুযোগ বন্ধ করা অনুচিত।