মোঃ মুজিবুর রহমান,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০০:৩১, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবি -বাংলার চোখ
ঠাকুরগাঁওয়ে সরকারের বিধিমালা অমান্য করে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ করায় তৈয়াবুর রহমান নামে এক ব্যক্তির ওপর হামলা ও হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (৮ নভেম্বর) সকালে পীরগঞ্জ উপজেলার ২নং কোষারাণীগঞ্জ ইউনিয়নের নাকাটি হাট বাজারে এই হামলার ঘটনা ঘটে। অভিযুক্তরা হলেন স্থানীয় প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন ও মকবুল মেম্বার।
অভিযোগকারী তৈয়াবুর রহমান জানান, কোষারাণীগঞ্জ ইউনিয়নের কোষা বালু মহালটি ইজারা নিয়েছেন নওগাঁর এক ঠিকাদার। তবে ঠিকাদারের সহযোগিতায় স্থানীয় প্রভাবশালী মোশাররফ মাস্টার, সালাউদ্দিন ও মকবুল মেম্বার টাঙ্গন ব্রীজের ঠিক পাশেই ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। এতে পাশের দুটি ইউনিয়নের মানুষের একমাত্র যাতায়াতের মাধ্যম টাঙ্গন ব্রীজটি হুমকির মুখে পড়ছে।
তিনি আরও বলেন, “আমরা এলাকাবাসী মিলে এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়ে পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেই। পরবর্তীতে প্রশাসন ঘটনাস্থলে গিয়ে বালু মহালকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলে তারা।
তৈয়াবুর অভিযোগ করেন, আজ (৮ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে স্কুল থেকে বের হয়ে চা খেতে গেলে সালাউদ্দিন ও মকবুল মেম্বার অতর্কিতভাবে তার ওপর হামলা করে এবং অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। একপর্যায়ে তার গায়ে হাত তোলার চেষ্টা করলে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তৈয়াবুরের সঙ্গে দু’জনের বাকবিতণ্ডা চলতে দেখে তারা এগিয়ে গিয়ে দুই পক্ষকে আলাদা করেন। তারা বলেন, “অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে সৃষ্টি হওয়া আন্দোলন একটি ভালো উদ্যোগ। কারণ ব্রীজের পাশেই ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে, যা ব্রীজের জন্য হুমকিস্বরূপ। কিন্তু ভালো কাজ করতে গিয়ে তৈয়াবুর আজ হেনস্থার শিকার হয়েছেন—এটা দুঃখজনক। স্থানীয়রা অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধসহ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এদিকে অভিযুক্ত মকবুল মেম্বার ও সালাউদ্দিন ফোনে উল্টো অভিযোগ তুলে বলেন, তৈয়াবুরই নাকি তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। বালু মহালের বিষয়ে জানতে চাইলে মকবুল মেম্বার বলেন, আমি এই কাজে যুক্ত আছি। অন্যদিকে সালাউদ্দিন জানান, যেখানে বালু তোলা ও রাখা হচ্ছে দুই জায়গাই আমার, ড্রেজার মেশিনটিও আমার। তারা আরো বলেন, ড্রেজারের অনুমতি নিয়েই আমরা বালু তুলছি। তবে সেই অনুমতি পত্র চাইলে তারা সেটি দিতে নানা টালবাহানা ও কাদা ছোড়াছুড়ি শুরু করেন।
এ বিষয়ে পীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।