ঢাকা, রোববার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫

১৩ পৌষ ১৪৩২, ০৭ রজব ১৪৪৭

বিদ্যুচ্চালিত ইজিবাইক-রিকশার দৌরাত্ম্য: ৪০ লাখের অর্ধেকই ঢাকায়

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ০০:৫২, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫

বিদ্যুচ্চালিত ইজিবাইক-রিকশার দৌরাত্ম্য: ৪০ লাখের অর্ধেকই ঢাকায়

ছবি :সংগৃহীত

বাংলাদেশে বিদ্যুচ্চালিত থ্রি-হুইলারের (ইজিবাইক-রিকশা) সংখ্যা এখন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) জানিয়েছে, দেশে বর্তমানে প্রায় ৪০ লাখ বিদ্যুচ্চালিত থ্রি-হুইলার চলাচল করছে। এর মধ্যে ঢাকা শহরেই রয়েছে প্রায় ২০ লাখ, যার ৯৫ শতাংশেরই কোনো নিবন্ধন নেই।

সিপিডির গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, সিলেট ও ময়মনসিংহে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিদ্যুচ্চালিত থ্রি-হুইলার চলাচল করছে। তবে রাজধানীতে সংখ্যা ও ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি হওয়ায় সমস্যার মাত্রাও এখানে তীব্র।

পরিবহন বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. সামছুল হক বলেন, বিদ্যুচ্চালিত থ্রি-হুইলার দৌরাত্ম্যের সমস্যার মূল কারণ হলো সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর অদূরদর্শিতা এবং পেশাদারত্বের অভাব রয়েছে। উৎপাদনের শুরু থেকেই এটি নিয়ন্ত্রণ করা উচিত ছিল। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অবহেলার কারণে এ সমস্যা এখন বিশাল আকার ধারণ করেছে।

তিনি বলেন, অনেকেই মনে করেন এসব ছোট যানবাহনের নিবন্ধন দিলে সমস্যার সমাধান হবে। কিন্তু এর আগে দেখা গেছে, রিকশা বা অন্য যানের ক্ষেত্রে নিবন্ধন দিলেও তাদের সংখ্যা বা চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। বরং এতে বিশৃঙ্খলা আরো বেড়েছে এবং যাতায়াত ব্যবস্থা আরো নাজুক হয়ে পড়েছে।

এছাড়া বিদ্যুচ্চালিত থ্রি-হুইলারের ব্যাটারি তৈরিতে ব্যবহার করা হয় সিসা, সিসা অক্সাইড ও সালফিউরিক অ্যাসিড। এর মধ্যে সিসা সবচেয়ে বিষাক্ত উপাদান। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের তথ্যমতে, বিশ্বে সিসা দূষণে আক্রান্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। বছরে সিসার কারণে বাংলাদেশে ৩০ হাজার মানুষের অকালমৃত্যু হয়। এ পর্যন্ত বাংলাদেশে সিসা বিষক্রিয়ার প্রভাবে ২৫ বছরের বেশি বয়সী প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে হৃদরোগের কারণে ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

সিপিডির গবেষণা বলছে, বিশ্বজুড়ে মোট সিসা ব্যবহারের প্রায় ৯০ শতাংশই সিসা-অ্যাসিড ব্যাটারি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। ফলে এটি পরিবেশ দূষণের একটি বড় উৎস। বাংলাদেশে বিদ্যুচ্চালিত রিকশা ও ইজিবাইক খাতে মোট সিসা-অ্যাসিড ব্যাটারির প্রায় ৭৮ শতাংশ ব্যবহার হয়। ফলে ব্যবহৃত ব্যাটারি অনানুষ্ঠানিক ও অনিরাপদ উপায়ে পুনর্ব্যবহারের প্রবণতা দ্রুত বাড়ছে।

গবেষণা টিমের সদস্য ও সিপিডির প্রোগ্রাম অ্যাসোসিয়েট মো. খালিদ মাহমুদ গণমাধ্যমকে বলেন, যেহেতু পরিবহন খাতের বাজারের ৭৮ শতাংশই সিসা-অ্যাসিড ব্যাটারি দখল করেছে, সেহেতু মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকির জন্য দায়ী এ অ্যাসিড। তবে শুধু ব্যাটারিচালিত থ্রি-হুইলারকে দায়ী করা যাবে না। এর ব্যবহার বিভিন্ন সেক্টরে হচ্ছে।

আরও পড়ুন