টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬:০২, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবি -বাংলার চোখ
পৌষের মাঝামাঝি সময়ে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে টাঙ্গাইলের দিগন্ত। বুধবার(২৪ ডিসেম্বর) ভোররাত থেকেই জেলা শহরসহ ১২টি উপজেলার পথঘাট ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ায় স্থবির হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জনজীবন।
এদিন সকাল থেকে যমুনাসেতু-টাঙ্গাইল-ঢাকা মহাসড়কসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়কে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। কুয়াশার তীব্রতায় দৃষ্টিসীমা কমে আসায় চালকরা হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে যানবাহন চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন। দূরপাল্লার বাস ও পণ্যবাহী ট্রাকগুলো নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাতে কয়েক ঘণ্টা দেরি করছে। মহাসড়কের ঝুঁকিপূর্ণ মোড়গুলোতে দুর্ঘটনা এড়াতে পুলিশি তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।
মহাসড়কে চলাচলকারী নাদের পরিবহনের চালক সুমন মিয়া জানান, ঢাকা থেকে দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করছেন। মহাসড়কে ভোর থেকে স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি কুয়াশা পড়েছে। ফলে গাড়ি চালাতে ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে। অতিরিক্ত ঘনকুয়াশার কারণে সামনে কি আছে তা সহজে বোঝাও যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে।
সিলেট থাকা আসা পাবনাগামী ট্রাক চালক আব্দুল মোমেন জানান, ঘন কুয়াশার কারণে সামনে কী আছে তা বোঝা মুশকিল হয়ে পড়েছে। ধীর গতিতে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। এছাড়া এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পূর্ব পর্যন্ত মহাসড়কের কাজ শেষ না হওয়ায় কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেশি। এ কারণে হেডলাইন জ্বালিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে।
যমুনা নদীবেষ্টিত ভূঞাপুর ও কালিহাতী উপজেলার অংশে ঘন কুয়াশার কারণে নৌযান চলাচল সাময়িকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। যমুনা বহমুখী সেতু এলাকায় কুয়াশার ঘনত্ব বেড়ে যাওয়ায় ইঞ্জিনচালিত নৌকাগুলোও ধীরগতিতে যাতায়াত করতে দেখাগেছে।
কুয়াশার কারণে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ ও কৃষকরা। প্রচণ্ড ঠান্ডায় বোরো ধানের চারা রোপণ ও সবজি ক্ষেতের পরিচর্যা করতে হিমশিম খাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকরা। কৃষি বিভাগ থেকে কুয়াশাজনিত রোগবালাই থেকে ফসল রক্ষায় কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এদিকে, বেলা বাড়ার সাথে সাথে সূর্যের দেখা মিললেও কুয়াশার দাপট পুরোপুরি কমেনি।
যমুনা সেতু পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানি জানান, অতিরিক্ত কুয়াশা থাকলেও স্বাভাবিক মতোই যানবাহন চলাচল করছে। এছাড়া মহাসড়কে দুর্ঘটনারোধে সার্বক্ষণিক পুলিশ কাজ করছে।
টাঙ্গাইল আবহাওয়া অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যবেক্ষক জামাল উদ্দিন জানান, সারা দেশের ন্যায় টাঙ্গাইলেও গত কয়েকদিন ধরে অতিরিক্ত কুয়াশা পড়ছে। বুধবার টাঙ্গাইলে সর্বনিম্ন ১৩ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপামাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
তিনি জানান, আগামি কয়েকদিন এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে এবং কুয়াশায় সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।