ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫

১৬ পৌষ ১৪৩২, ১০ রজব ১৪৪৭

ফুটপাতের গরমকাপড়ের চাহিদা প্রচুর

মহানন্দ অধিকারী মিন্টু, পাইকগাছা থেকে

প্রকাশ: ০০:০৪, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫

ফুটপাতের গরমকাপড়ের চাহিদা প্রচুর

ছবি -বাংলার চোখ

উপকূলীয় জনপদ খুলনার পাইকগাছায় গত কয়েকদিন ঘন কুয়াশা আর তীব্র শীতে জুবুথুবু প্রাণীকুল। শীতের তীব্র থেকে বাঁচতে দরিদ্র ও মধ্যম আয়ের মানুষ ছুটছে ফুটপাতের গরমকাপড়ের দোকানে। আবহাওয়া অফিস তথ্য সূত্রে আগামী ৩-৪ দিন রাতে ও দিনে ঘন কুয়াশা অবহত থাকবে। সোমবার দিনে কুয়াশায় ঢাকা ছিল, সূর্যের দেখা মেলেনি। শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে ফুটপাতের গরম কাপড়ের কদর এখন তুঙ্গে। দোকানগুলোতে উপচেপড়া ভীড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

তবে এ সুযোগে বিক্রেতারা কাপড়ের দামও বেশি চাইছেন বলে এমন অভিযোগ করছে সব ধরনের ক্রেতারা। ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকে ঘন কুয়াশা আর প্রচন্ড শীতে ঠান্ডাজনিত রোগ বাড়ছে। অনেকেই শীতজনিত রোগ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। যে কারণে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তাদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধার রোগীর সংখ্যাই বেশি। উপজেলার বাণিজ্যিক নগরী কপিলমুনি কয়েক জন দোকানী জানান, প্রতিদিন রাত ৯টার আগে শীতের কারণে বাজার ফাঁকা হয়ে যায়। শীতের উষ্ণতার জন্য গরম কাপড় কিনতে শীতবস্ত্র নতুন ও পুরাতন কাপড়ের দোকানগুলোতে ভীড় দেখা যায়। এবাজারে অস্থায়ী পুরাতন গরম কাপড়ের বাজার বসেছে। এছাড়া পৌরসদর, চাঁদখালী বাজার সহ  বিভিন্ন হাটবাজারে খোলা মাঠে বা ফুটপাতে পুরাতন গরম কাপড়ের দোকানে ভিড় জমাচ্ছে। গরম কাপড় ক্রয়ের ক্রেতার সংখ্যায় অনেক বেশি।

সামীম হোসেন জানান, বর্তমানে গরম কাপড়ের মার্কেটে নারী পুরুষ ও শিশুরা মিলে ভিড় করে পছন্দ মত শীতের কাপড় ক্রয় করছে। ২-৩শ’ থেকে শুরু করে ১২শ’-১৫শ’  এমনি ৪/৫ হাজার টাকা দামের কাপড়ও ক্রয়-বিক্রি হচ্ছ। শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির সাথে মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে এক একটি কাপড়ের দাম বেড়েছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা। শীতকে কেন্দ্র করে উপ শহরের ধান্যচত্ত সহ বিভিন্ন এলাকায় অনন্ত ২০-২৫টি মৌসুমী গরম কাপড়ের দোকান গড়ে ওঠেছে।

এসব দোকানে নিম্নবিত্ত বিশেষ করে দিনমজুর পরিবারগুলোর পাশাপাশী মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষও ভীড় জমাচ্ছেন পছন্দের পুরাতন গরম কাপড় কেনার জন্য। এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে কিংবা বেসরকারি পর্যায়ে কেউই হতদরিদ্রদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করেননি। শীতের কারণে শুরু হয়েছে ঠান্ডা জনিত বিভিন্ন প্রকার রোগ ব্যাধী। এসব শীত জনিত ব্যাধিতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হন বৃদ্ধ ও শিশুরা।

উপ শহরের বিপণী বিতাণগুলোতে গরম কাপড় কেনার সামর্থ্য না থাকায় নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন পুরাতন শীতবস্ত্র দোকান মুখি হচ্ছেন। এখানে স্বল্পমূল্যে পাওয়া যাচ্ছে সোয়েটার, জ্যাকেট, মাফলার, কোর্ট, প্যান্ট, কানটুপিসহ বিভিন্ন প্রকার শীতবস্ত্র। পাশাপাশি অভিজাত শীতবস্ত্রের দোকানগুলেতেও ভীড়ের কমতি নেই।

কথা হয় ক্রেতা হাসান আলী, দিনমজুর সাত্তার ও আব্বাস আলীর সাথে। তারা জানান, এসব পুরাতন গরম কাপড়ের দোকানগুলো থেকে ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০ টাকার মধ্যেই মোটামুটি ভালো মানের শীতের পোশাক কেনা যাচ্ছে। এসব গরম কাপড় পাওয়া না গেলে আমাদের মতো গরীব মানুষরা গরম কাপড় কিনতেই পারতো না।

ফুটপাতের পুরতন গরম কাপড় বিক্রেতা শহর আলী গাজী, আব্দুর রাজ্জাক, শরিফুল ইসলাম, আয়ুব আলী, রিজায়ুল, শাহিন, আরশাদ, হোসেন আলী, ইসলামসহ অনেকে জানান, শীতকে সামনে রেখে আগে ভাগেই সৈয়দপুর, চট্টগ্রাম ও ঢাকা থেকে গরম কাপড়ের বেল (বান্ডেল) আমদানী করা হয়েছে। প্রথম দিকে ক্রেতা না মিললেও পৌষের শুরুতে শীত বাড়ার সাথে সাথে ক্রেতাদের ভীড় বাড়ায় বেচাকেনা মোটামুটি বেড়ে গেছে। তবে এক সপ্তাহ আগের দামের চেয়ে প্রতিটি কাপড়ের দামও বেড়েছে ৩০ থেকে ৫০টাকা কোন কোন ক্ষেত্রে তা ১০০টাকা পর্যন্ত ঠেকেছে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, শীত বাড়লেও এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণের জন্য কোন বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। বরাদ্দ পাওয়া গেলে তা নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর মাঝে বিতরণ করা হবে। সব মিলিয়ে ফুটপাতের গরম কাপড়ের কদর এখন তুঙ্গে অবস্থান করছে। 

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন