আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০০:২৭, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
ইরানের হরমুজ দ্বীপে এমন দৃশ্যের দেখা মেলে। ছবি: সংগৃহীত
প্রকৃতি মাঝেমধ্যে এমন সব রূপ ধারণ করে যা দেখলে বিস্ময়ে বিমূঢ় হতে হয়। ইরানের হরমুজ দ্বীপ উপকূলে বর্তমানে এমনই এক রোমহর্ষক দৃশ্যের দেখা মিলছে। পাহাড়ের ঢাল বেয়ে সমুদ্রের নীল জলে মিশছে গাঢ় লাল রঙের ধারা, যা দেখে মনে হচ্ছে যেন আস্ত এক রক্তনদী গিয়ে মিশছে সাগরে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ‘রক্তলাল’ সমুদ্রের ভিডিও এখন রীতিমতো ভাইরাল। খবর গালফ নিউজের।
প্রথম দেখায় আঁতকে ওঠার মতো মনে হলেও, এই ঘটনার পেছনে রয়েছে এক চমৎকার প্রাকৃতিক কারণ। হরমুজ দ্বীপটি মূলত তার খনিজসমৃদ্ধ মাটির জন্য বিশ্বজুড়ে সুপরিচিত। এখানে প্রচুর পরিমাণে আয়রন অক্সাইড বা লৌহ আকরিক রয়েছে, যা স্থানীয়ভাবে ‘গোলাক’ নামে পরিচিত।
ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হলে পাহাড়ের এই লাল মাটি বৃষ্টির জলে ধুয়ে প্রবল স্রোত নিয়ে সাগরে গিয়ে আছড়ে পড়ে। খনিজ মিশ্রিত এই লাল পলি যখন সমুদ্রের নীল জলের সংস্পর্শে আসে, তখন পুরো উপকূলীয় এলাকা টকটকে লাল বর্ণ ধারণ করে। নেটিজেনরা একে ‘রক্তের ধারা’ বললেও এটি মূলত বিশুদ্ধ খনিজ লবণের খেলা।
এই অভূতপূর্ব দৃশ্য দেখতে এখন হরমুজ দ্বীপে ভিড় করছেন দেশি-বিদেশি অসংখ্য পর্যটক ও আলোকচিত্রী। দ্বীপটিকে বলা হয় ‘রেইনবো আইল্যান্ড’ বা রংধনু দ্বীপ। কারণ এখানে কেবল লাল নয়, বরং হলুদ, কমলা এবং আরও নানা রঙের শিলাস্তর দেখা যায়। বৃষ্টির পর সমুদ্রের এই রক্তিম রূপ দ্বীপটির সৌন্দর্যকে এক নতুন মাত্রা দিয়েছে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই লাল মাটির বিশেষত্ব হলো এটি কেবল দেখতেই সুন্দর নয়, বরং স্থানীয়রা এটি রান্নায় মসলা হিসেবে এবং শিল্পকলায় রং হিসেবেও ব্যবহার করে থাকেন। আবহাওয়া শান্ত হলে সমুদ্রের জল আবার স্বাভাবিক রঙে ফিরে আসবে, তবে আপাতত লোহিত সাগরের এই বিরল দৃশ্য দেখার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা।
সূত্র: গালফ নিউজ