শাহরিয়ার মিল্টন , শেরপুর
প্রকাশ: ২৩:৩১, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবি -বাংলার চোখ
শেরপুরে ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সেইসাথে শীতে ছিন্নমূল মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। পৌষ মাসের মাঝামাঝি সময়ে এসে শেরপুর জেলা জুড়েই পড়েছে হাড়কাঁপানো শীত। জেলার সীমান্তবর্তী তিন উপজেলা ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ীর গারো পাহাড়ি অঞ্চলে শীতের তীব্রতা আরো ব্যাপক। বাতাসের আর্দ্রতায় শীতের অনুভূতিকে আরও তীব্রতর করে তুলেছে।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা শেরপুরের গারো পাহাড় বেষ্টিত উপজেলাগুলোতে শীতের প্রকোপ যেন কয়েক গুণ বেশি। শেরপুরের গারো পাহাড়ের ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার হতদরিদ্র মানুষের কষ্ট অনেক বেশি। এসব পাহাড়ি উপজেলায় কয়েক লাখ মানুষ বসবাস করেন। হিমেল বাতাস আর কনকনে ঠান্ডায় পাহাড়ি অঞ্চলের অনেক হতদরিদ্র মানুষ ঘরবন্দি হয়ে পড়েছেন। প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের অভাবে ছিন্নমূল মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন শিশু ও বয়স্ক মানুষেরা।
ঝিনাইগাতী উপজেলার শতবর্ষী ডা. আব্দুল বারী বলেন, গারো পাহাড় সীমান্তে শীতের তীব্রতা জনজীবনকে কার্যত অচল করে তুলেছে।
স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত শেরপুর জেলায় যে পরিমাণ কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। শীতার্ত মানুষের শীত নিবারণের জন্য পর্যাপ্ত কম্বলসহ শীতবস্ত্র বরাদ্দ প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন শেরপুর-৩ (ঝিনাইগাতী-শ্রীবরদী) আসনে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী মোঃ মাহমুদুল হক রুবেল। মধ্য পৌষের শীতের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে দিনমজুর শ্রেণির মানুষের জীবনে। প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে অনেকেই কাজে যেতে পারছেন না। সীমান্তবর্তী শেরপুর জেলায় প্রতি বছরই শৈত্যপ্রবাহে হতদরিদ্র মানুষের কষ্টের সীমা থাকেনা। তাই পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র বিতরণের জন্য আবেদন জানিয়েছেন দরিদ্র মানুষ।
এদিকে শীতজনিত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে ক্রমাগত ভাবে। জেলা সদর হাসপাতালসহ ৫ টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিনই বাড়ছে সর্দি, কাশি, জ্বর ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। চিকিৎসকদের মতে, শিশু ও বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে কম্বল বিতরণ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে তা গারো পাহাড়ি অঞ্চলের শীতার্ত মানুষের প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল বলে ইউপি চেয়ারম্যানগণ জানান। অপরদিকে প্রচন্ড শীতে বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কৃষকেরা।
শেরপুরের সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে। তবে আরো পর্যাপ্ত কম্বলসহ শীতবস্ত্র বরাদ্দ প্রয়োজন।